করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ সমগ্র দেশজুড়ে রীতিমতো হাহাকার। এই মহামারী তে অনেকেই স্বজনহারা হয়েছে। এমনকি বহু শিশু বাবা মা কে হারিয়ে আজ অনাথ হয়ে গেছে। করোনা যেমন একদিকে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঠিক অন্যদিকে দেশের বেকারত্ব চরম সীমায়। লকডাউন এর জন্য বহু পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। চারিদিকে অর্থসংকট আর দেশের GDP এর হার অনেক নিচে নেমে গেছে। এছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি বর্তমানে প্রধান সমস্যা।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র মোদি সরকারের কর্মদক্ষতা নিয়ে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের এক পক্ষ সরকারবিরোধী হাওয়া তৈরি করেছে। অনেকেই আছে যারা সরকারের পক্ষে। কারো মত দেশ চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ মোদি সরকার। তাই এই বিষয়টিকে জানার জন্য একটি সার্ভে চালায় সি ভোটার (C voter) সংস্থা। এতে 534 টি লোকসভার প্রায় 1 লক্ষ্য 39 হাজার মানুষের উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষাতে জনতার একাধিক প্রশ্ন তুলে ধরা হয় যার মধ্যে বিদেশনীতি, দেশে ভ্যাকসিন বন্টন, লকডাউন এর পদক্ষেপ, রাম মন্দির নির্মাণ, 370 ধারা বিলোপ সহ একাধিক বিষয়ের উপর সার্ভে করা হয়।
এই সমীক্ষাতে কি উঠে এসেছে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
সমীক্ষাটি তে দেখা গেছে অনেক মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারকে সমর্থন করছে এবং অপর পক্ষে বিরোধী জনসংখ্যা কম নয়।তারপর সমীক্ষাটি তে তুলে ধরা হয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে জনতা কাকে দেখতে চাই। সমীক্ষাটি তে প্রধানমন্ত্রীদের বিকল্প হিসেবে নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধী, মনমোহন সিং, মমতা ব্যানার্জি ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নাম দেওয়া হয়। পরিসংখ্যানে মানুষদের মত সত্যি চমকে দেওয়ার মতো। যেখানে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরোধিতায় দেশে কৃষক আন্দোলনের মতো একটি বড় আন্দোলন হয়ে গেল।
এই ছাড়া NRC,CAA নিয়োগ দেশে আন্দোলন হয়ে গেল সেই পরিস্থিতিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় জনগণ নরেন্দ্র মোদি কেই বেছে নিলেন। যদিও সেখানে আরো অন্যান্য প্রধানমন্ত্রীদের নাম বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছিল।সমীক্ষাটি তে দেখা গেছে প্রায় 42 শতাংশ মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে চান। অন্যদিকে 12 শতাংশ মানুষ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কে, 6 শতাংশ মানুষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কে, 6 শতাংশ মানুষ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কে এবং আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে 4 শতাংশ মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন।
তবে রাজ্যে মমতা ব্যানার্জির জয়ের হ্যাটট্রিক দিল্লিতে কোনরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। C- Voter সমীক্ষাটি তে আরো একটি প্রশ্ন সাধারণ মানুষের জন্য তুলে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুটি অপশন দেওয়া হয় একজন হলো নরেন্দ্র মোদি ও অন্যজন রাহুল গান্ধী।সরাসরি জানতে চাওয়া হয় তাকে মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। সমীক্ষা টির পরিসংখ্যানে জানা গেল 50 শতাংশ মানুষ নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর পক্ষে 30 শতাংশ ভোট পড়ে।
10 শতাংশ ভোটার জানায় যে এই দুজন ব্যক্তিত্বের মধ্যে কাউকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান না। এবং বাকি 10 শতাংশ মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইনি। অর্থাৎ সমীক্ষার পরিসংখ্যান অনুসারে আমরা বুঝতে পারলাম যে কেন্দ্রে মোদি সরকার দেশে একের পর এক বিভিন্ন পদক্ষেপ গুলি দিয়েছে সেগুলির যথেষ্ট বিরোধিতা হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে নরেন্দ্র মোদিকে সরানো যায় নি। অর্থাৎ তিনি এখনো ভারতের জনতার কাছে সমানভাবে জনপ্রিয় যতটা প্রধানমন্ত্রী পদে আসার সময় ছিলেন।