করোনা ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা আমরা অর্থাৎ মনুষ্য জাতি দেখেছি এবং বর্তমানেও দেখছি। এই ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢোকার প্রবেশ পথ চিনে ফেলেছে। এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার সামগ্রিক জীবনচক্র মানুষের শরীরে সেরে ফেলেছে এবং মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।করোনাভাইরাস প্রথমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং সবশেষে নিজের প্রতিলিপি ওই কোষে ছেড়ে দেয় এবং হিউম্যান ট্রান্সমিশনে সাহায্য করে। এর ফলে মানুষ ই ভাইরাসের বাহক হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের যাতায়াতের পথ পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং জানিয়েছেন আপার রেস্পিরাটরি ট্র্যাক মানুষের শরীরে ভাইরাসের এন্ট্রিপয়েন্ট হলো নাক ও মুখ। তারপর শ্বাসনালীর ভিতর দিয়ে ভাইরাস ফুসফুসে গিয়ে পৌঁছায়।যদি ব্যক্তির কোন রকম ধূমপান অথবা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংক্রমণ অতি দ্রুত হারে হয়। এককথায় ভাইরাসটি নাক ও মুখ দিয়ে ঢুকে শ্বাসনালী হয়ে সোজা ফুসফুসে চলে যায়। ফুসফুসে প্রবেশ করার আগে এই ভাইরাসটি গলবেট ও সিলিয়েট কোষ কে নিশানা করে। সিলিয়েড কোষ হলো ছোট ছোট চুলের মত অংশ যেগুলি ভাইরাসকে ছাঁকার কাজ করে।
কি কি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে
এখন জেনে নেওয়া যাক এই ভাইরাস আপনার আপার রেস্পিরাটরি ট্রেক্ট এ এই ভাইরাস প্রবেশ করলে কি কি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
ভাইরাসটি সংক্রমণ হলে হালকা জ্বর, শুকনো কাশি, খাবারের স্বাদ চলে যাওয়া, ঘ্রাণ শক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে প্রায় এক থেকে দুই সপ্তাহের মত। তবে এই ভাইরাসটির মেন টার্গেট হোলো ফুসফুস। প্রোটিন হচ্ছে এই ভাইরাসটির প্রবেশ এর মূল চাবিকাঠি। দেহ কোষের প্রোটিনের সঙ্গে জোট বেঁধে এই ভাইরাস ফুসফুসে প্রবেশ করে। একবার ফুসফুসে প্রবেশ করার পর ভাইরাসটির মারাত্মকতা আরো বেড়ে যায়। প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ফুসফুস থেকে নানা অঙ্গে ভাইরাসটি সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। এমনকি রোগীর মাল্টি অর্গান ফেল ও হতে পারে।
এই অবস্থায় রোগীর ভেন্টিলেশন এর প্রয়োজন হয়। কারণ এই সময় রোগীর শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। এবং তার সাথে সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ঠিক রাখার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার এর প্রয়োজন হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। হাসপাতালের বেডে সংখ্যা সীমিত ও ভেন্টিলেশনের সুবিধা অনেক কম। তাই অনেকে বাড়িতেই এই সব প্রক্রিয়া গুলি আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রাখতে হচ্ছে।
তাই আপনি যদি এই মারাত্মক ভাইরাসের কবল থেকে রক্ষা পেতে চান তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আপনার জন্য অতি আবশ্যক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। ভিড় কোন এলাকা থেকে নিজেকে দূরত্বে রাখুন। বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পর পোশাক গুলি কেছে নিন। হাত সব সময় স্যানিটাইজার দিয়ে স্যানিটাইজ করুন। এবং বর্তমানে যে পরিস্থিতি অনুযায়ী একটি মাস্ক কাজ করছে না। তাই প্রয়োজনে ডবল মাস্ক ব্যবহার করুন। এইসময় বাইরের ফাস্টফুড খাবার থেকে দূরে থাকুন। এই সব স্বাস্থ্যবিধি গুলি মেনে চলা এখন আপনাদের কাজ। আর আপনি যদি ভ্যাকসিন এর জন্য যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে ভ্যাকসিন নিয়ে নিন।