সম্প্রতি বাংলার জনগণের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প (Swasthya Sathi Scheme)। তবে এখনও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল-নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ প্রায়শই উঠে আসে। এর জেরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রায়ই প্রশাসনিক সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ উঠে আসছে।
এমনকি অনেক ক্ষেত্রে জাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করার অভিযোগও উঠে আসছে। রাজ্যের জনগণের এই অসুবিধার কারণে সম্প্রতি এক বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান রুখতে প্রশাসনিক তৎপরতা যথেষ্ট বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকি জাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি রুখতে ডিজিটাল রেশন কার্ডের মতোই এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে নবান্ন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এবার থেকে শনি-রবি ছুটির দিনেও তৈরি করা যাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এছাড়াও হাসপাতালে কার্ড ক্লেইম (Claim) করার ক্ষেত্রেও আর অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না ছুটির দিনগুলি। অর্থাৎ শনি, রবিতেও হাসপাতালগুলি এই কার্ড ক্লেইম করতে পারবে। এরই সঙ্গে কোনো হাসপাতাল যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নিতে চাই তার জন্য একটি 24×7 টোল ফ্রি নাম্বার চালু করেছে রাজ্য সরকার।
এই বুধবার স্বাস্থ্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার থেকে প্রতিটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পিছনে থাকবে এই টোল ফ্রি নাম্বার। কোনো হাসপাতাল যদি এই কার্ড নিতে অস্বীকার করে তাহলে 1800 3455 384 টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানানো যাবে। এছাড়াও অভিযোগ জানানো যাবে আরও চারটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারেও। নাম্বারগুলি হল- 9073313211, 9513108383, 8334902900 ও 9830164286।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার ব্যানার্জি জানিয়েছেন, কোন হাসপাতাল যদি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তাহলে সেই হাসপাতালে হেল্প ডেস্কের সামনেই অভিযোগ জানাতে পারেন উপভোক্তা। অভিযোগ আসা মাত্রই ব্যাপারটিকে খতিয়ে দেখা হবে এবং শীঘ্রই তার সমাধান করা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ক্ষেত্রে বাড়ির প্রধান বাড়ির মহিলারা। পরিবারের বাকিরা সংশ্লিষ্ট মহিলার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। তবে এমন অনেক একক উপভোক্তা রয়েছেন, যারা মহিলা নন। ইতিমধ্যেই নবান্ন জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি উপভোক্তার আধার নাম্বার সংগ্রহ করে তা মূল তথ্য ভান্ডারে সংযুক্ত করতে। রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে যে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আছে এমন কোনো রোগীকে কোন বেসরকারি হাসপাতাল ফেরাতে পারবে না।
আরও জানানো হয়েছে, চিকিৎসা করতে হবে রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া প্যাকেজ এর মধ্যেই। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ, ইমপ্ল্যান্ট- এর ক্ষেত্রেও বিল করতে হবে সরকারি হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের হিসেবেই। আর এই সমস্ত বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা জানানোর জন্যই টোল ফ্রি নাম্বার এবং হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার চালু করল রাজ্য সরকার।