আমরা বর্তমানে ডিজিটাল যুগের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এখন প্রায় সকলের হাতে স্মার্টফোন থাকা একটি সামান্য ব্যাপার। আট থেকে আশি সকলের হাতে এখন স্মার্ট ফোন। এই স্মার্টফোন শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে মস্তিষ্কে এর প্রভাব পড়ছে।
অভিভাবকরা নিজেদের ব্যস্ততার চাপে তাদের সন্তানের প্রতি সময় দিতে পারেন না এজন্য তারা তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিচ্ছেন। এর ফলে শিশুর চোখ মস্তিষ্কে উভয়েই খারাপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী শিশুদের আচরণগত বিশেষ পরিবর্তন দেখা গেছে। দেখা গেছে শিশুর অতিরিক্ত জেদি ,খিটখিটে মেজাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।
এই সমস্ত শিশুদের খুব তাড়াতাড়ি ফোনের আসক্তি থেকে রেহাই দিতে না পারলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে যেতে পারে।
মনোবিজ্ঞানী ক্যাথেরিন স্টাইনার অ্যাডেইর বলেন,এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের সেকেন্ডে সেকেন্ডে বারবার মোবাইলের স্কিন অন করে নোটিফিকেশন অথবা লাইক কমেন্ট এই সমস্ত জিনিস চেক করা। এটিও সময় সাথে সাথে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
শিশুদের মোবাইল এর আসক্তি কমানোর কিছু উপায় জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ান লাইট ইনস্টিটিউট এর প্রতিষ্ঠাতা শারমিন আহমেদ।
তিনি জানান শিশুদের এই মোবাইল আসক্তি মোটেই ভালো নয়। তাদের এই আসক্তি দূর করার জন্য যতটা সম্ভব শিশুর সাথে গল্প করুন, যেহেতু শিশুরা বড়দের বিশেষ করে অনুসরণ করে তাই এমন কিছু তার কাছে আপনি কাজ করবেন না জেটিতে তার ক্ষতি হয়। অর্থাৎ আসক্তি কমাতে শিশুটির সামনে যতটা সম্ভব আপনিও কম স্মার্টফোন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
শিশুদের মোবাইল এর আসক্তি কমানোর কিছু উপায়
•বাড়ির চারিদিকে শিশুদের উপযোগী রং তুলি ,ছবি আঁকা সামগ্রী, মিউজিকের সামগ্রিক তথা বাঁশি, তবলা, গিটার, এই সমস্ত জিনিস রাখুন। এতে শিশুটি এই সমস্ত বিষয়ের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হবে।
•শিশুর চারপাশে বিভিন্ন ধরনের কমিক্স বই, গল্পের বই, কবিতার বই, এছাড়াও অন্যান্য সমস্ত রকম ইন্টারেস্টিং বই রাখুন। এবং তার কাছে আপনিও বই পড়ুন। এতে শিশু আপনার বই পড়া অনুসরণ করে নিজেও বই পড়ার আকৃষ্ট হবে।
•শিশুকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খেলার মাঠ, পার্ক, অথবা বাগানে নিয়মিত নিয়ে যান। প্রয়োজনে খেলাধুলা করান। এতে শিশুর মানসিক অবস্থা ঠিক থাকবে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি কম হবে। এছাড়াও সম্ভব হলে মাসে একবার শিশুকে নিয়ে প্রকৃতি বিষয়ক ভ্রমণে নিয়ে যান। এতে শিশুর মানসিক বিকাশের যথেষ্ট উন্নতি হবে।
•এছাড়া শিশুকে ছোট থেকেই বাড়ির বিভিন্ন হালকা কাজে যুক্ত করুন। এর ফলে সে বাড়ির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি কম হবে।