যে কোন পিতা মাতার জন্য সেই মুহূর্তটি অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত যখন তারা নিজেদের সন্তানদের সফল হতে দেখেন এবং তারা আরো খুশি হন যখন পিতা-মাতার থেকেও সন্তানরা আরো অনেকাংশে সফলতা লাভ করে। মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার মাঝৌলি থানার সাব-ইন্সপেক্টর আশরাফ আলি যখন তার ডিএসপি মেয়ে শাবিরার সাথে দেখা করেন তখন তিনি অত্যন্ত গর্ব অনুভব করেন। যে থানায় শাবিরাকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে , ঠিক সেই থানাতেই আশরাফ আলীরও পোস্ট রয়েছে। সেটা একজন বাবার ভাগ্যই হোক বা এটা কাকতালীয় যে আশরাফ তার মেয়ে শাবিরাকে স্যালুট করেন কারণ তার মেয়ে তার থেকে সিনিয়র পদে রয়েছে।
আশরাফ আলীর পোস্টিং মধ্যপ্রদেশের লাসুদিয়া থানায় ছিল। করোনার আগে গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সময় আশরাফ তার মেয়ের সাথে দেখা করতে মাঝৌলিতে পৌঁছেছিলেন, যখন সারা দেশ লকডাউন তখন আশরাফ মাঝৌলিতে আটকে পড়েছিলেন। দীর্ঘ লকডাউনের কারণে আশরাফের পোস্টিং মাঝৌলি তেই করা হয়। এভাবে আশরাফ আলী ও তার মেয়ে একই থানায় পোস্টিং থাকার কারণে আশরাফ তার মেয়ে শাবিরাকে প্রতিদিন সালাম করেন। কারণ তার থেকে তার মেয়ের উচ্চ পদ।
শাবিরা 2013 সালে এসআই নির্বাচিত হন। কিন্তু আরও এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ শাবিরাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে। এবং সাবিরা তার নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে এসআইয়ের(SI) দায়িত্ব পালনকালে পিএসসির(PSC) জন্য প্রস্তুতি নেন এবং 2016 সালে সাফল্য পান। তিনি 2018 সালে ডিএসপি(DSP) হিসাবে নির্বাচিত হন। আশরাফ আলী উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার বাসিন্দা যিনি মধ্যপ্রদেশে কাজ করেন। আশরাফ তার মেয়ের জন্য গর্বিত। আশরাফের জন্য এটি একটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত,যখন তিনি তার মেয়েকে স্যালুট করেন।
সমাজে নারীদের শিক্ষিত হওয়া খুবই জরুরী। সমাজে ছড়িয়ে থাকা কিছু অপশক্তিকেও নির্মূল করতে হবে।শিক্ষা ছাড়া যেমন কোনো পরিবর্তন কল্পনা করা যায় না তেমনি কন্যা সন্তানের প্রতি সমাজের একটি অর্থবহ চিন্তাভাবনা তৈরি করতে হবে।ছোটবেলা থেকেই পুত্র ও কন্যা সন্তানদের সমান অধিকার দেওয়া।এমন পরিস্থিতিতে সকল অভিভাবকের উচিত তাদের সন্তানদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই মূল্যবোধ জাগ্রত করা। তারা যেন মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করে।
সাধারণত ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশি আবেগপ্রবণ হয়। বাপের বাড়ি হোক কিংবা শ্বশুরবাড়ি,উভয় জায়গায়ই মেয়েদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তারা সংসার পরিচালনার পাশাপাশি বংশকেও এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই কন্যার জন্মকেও অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। পরিবারের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বৈষম্য উন্নয়ন আনতে পারে না। সমাজে সর্বপ্রথম পুত্র ও কন্যা সন্তানদের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ প্রয়োজন।
বর্তমান সমাজে গর্ভে কন্যা ভ্রূণ হত্যা একটি জ্বলন্ত সমস্যা। কন্যাকেও পুত্র সন্তানের মত পরিবারের সুখের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।সমাজের মানুষ যখনই কন্যা সন্তান সম্পর্কে সুচিন্তা ভাবনা অবলম্বন করবে তখনই লিঙ্গ অনুপাতের ঘাটতি রোধ করা যাবে। প্রতিটি পুরুষের সাফল্যের পেছনে একজন নারীর হাত থাকে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না।
আল্ট্রাসাউন্ডের মতো যন্ত্রের ভুল ব্যবহার কন্যা ভ্রূণহত্যা এবং লিঙ্গ অনুপাতের পার্থক্যের প্রধান কারণ। নারীদেরও নারী জাত সম্মানের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কন্যা সন্তান জন্ম নিয়ে সমাজে দ্বন্দ্ব আজও অব্যাহত রয়েছে। নিজ সম্মানের জন্য নারী জাতিকে লড়াই করতে হবে।