Skip to content

আমেরিকার 50 লক্ষ টাকার চাকরিকে লাথি মেরে দেশ সেবায় নিয়োজিত সন্তোষ কুমার মিশ্র, অবসর সময়ে গরীব শিশুদের করেন শিক্ষাদান

বিহারের বাসিন্দা 2012 ব্যাচের আইপিএস সন্তোষ কুমার মিশ্র কে উত্তরপ্রদেশের আম্বেদকর নগর জেলার এসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।  2011 সালে সন্তোষ মিশ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (US) সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সমাজের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন।  তিনি 50 লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজ ছেড়ে দিয়ে সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুত হন এবং প্রথম প্রচেষ্টাতেই  তিনি দেশের বৃহত্তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।  তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল আমরোহা জেলায়।

সন্তোষ কুমার মিশ্র বলেছেন- “আমি বিহারের পাটনা জেলা থেকে এসেছি।  বাবা লক্ষ্মণ মিশ্রা সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন।  মা গৃহবধূ।  তিন বোন আছে। ”আমি বিহার স্কুল থেকে দশম এবং দ্বাদশ পাস করেছি।  তারপরে 2004 সালে পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এর পরে, আমার পোস্টিং ইউরোপের একটি সংস্থায় হয়েছিল।  ইউরোপে 4 বছর পরে কাজ করার পর, আমি যুক্তরাষ্ট্রে একটি চাকরি শুরু করি।  তারপরে প্রায় সাত বছর ধরে আমি নিউ ইয়র্ক, ইউরোপ এবং ভারতে বার্ষিক ৫০ লক্ষ প্যাকেজে কাজ করেছি, তবে সেখানে আমার মনে হয়নি বসে নি।

সন্তোষ কুমার মিশ্র

ips Santosh Kumar

স’ন্তোষ মিশ্রা এর বক্তব্য অনুযায়ী – “আমি বাবাকে শৈশব থেকেই সেনাবাহিনীতে দেখতাম, তখন থেকেই আমি দেশের সেবায়  নিজেকে নিয়োজিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম।”  তাই 2011 সালে নিউ ইয়র্কের চাকরি ছেড়ে ভারতে ফিরে এসে সিভিল সার্ভিসের(civil service) জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। ”আমি প্রস্তুতির 1 বছর পরে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়েছি এবং 2012 সালে দেশের বৃহত্তম পরীক্ষায় পাস করেছি।”

সন্তোষ মিশ্রা তার পোস্টিং এর সময় ঘটে যাওয়া এক কাহিনীর কথাও বলেন।

সন্তোষবলেছেন – “আমরোহা জেলায় এসপি পদে থাকাকালীন একটি পঞ্চমশ্রেণির শিশু এসে আমার কাছে অভিযোগকরেছিল যে তারএক বন্ধু ১৫দিনেরজন্য স্কুলে আসে নি। “আমি এই অভিযোগে এক দিক থেকে খুশি হয়েছিলাম অন্যদিকে সামান্য চিন্তিত হয়েছিলাম।  আমি সঙ্গে সঙ্গে এই অভিযোগের পদক্ষেপ নিয়েছিলাম।  আমি সেই শিশুটিকে খুঁজে বার করি । শিশুটির বাড়িতে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি যে সে মিষ্টির দোকানে কাজ করছে।  এর পরে আমি দোকানে গিয়ে তার বাবার সাথে সেখানে কথা বললাম।

Santosh Kumar Mishra

সন্তোষ কুমার মিশ্র

তারপর পুনরায়  সেই শিশুটিকে পড়াশুনার জন্য আবার স্কুলে পাঠানো হয়। এছাড়াও সন্তোষ মিশ্রা অবসর সময়ে টিউশনি ও পড়ান।

তার বক্তব্য অনুযায়ী

যেহেতু আমার পোস্টিংটি অক্টোবর 2017 এ আম্বেদকর নগর জেলায় হয়েছিল, তখন থেকে আমি সরকারী বিদ্যালয়ের বাচ্চাদের মধ্যে যাওয়ার জন্য সময় নিই”। “কিছুদিন আগে যখন আমি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম তখন সেখানকার চতুর্থ শ্রেণির বাচ্চারা আমার কাছ থেকে জিলাপি খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল।  তারপরে আমরা সেই বাচ্চাদের জন্য স্কুলে জিলাপি অর্ডার দিয়েছিলাম। ততক্ষণ পর্যন্ত আমি সেই ক্লাসে গণিতের প্রশ্নগুলি সমাধান করছিলাম, সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছি, তারপর সকলে মিলে একসাথে জিলাপি খেলাম। কিছু কিছু ছাত্রদের আমি ব্যাগ দিয়েছিলাম। তারপর থেকে  আমি প্রায়শই স্কুলে পড়াতে যাই। ”

“আমি মনে করি একদিকে যেমন খবর অপরাধ ও আইন-শৃঙ্খলা সামাল দেওয়া দায়িত্ব, ঠিক অন্যদিকে সমাজের জন্য কিছু বিশেষ কার্য আমার করা উচিত।”

সন্তোষ মিশ্রা এর মত একজন মহান ব্যক্তিত্ব কে স্যালুট জানাই।

Share