এক মুহূর্তে থমকে গেল দীর্ঘ ১৯ দিনের লড়াই। প্রয়াত হলেন টলিউডের জনপ্রিয় সুন্দরী সাহসী অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। ১লা নভেম্বর যে লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়েছিল, গতকাল রবিবার বেলা ১২ টা ৫৯ মিনিটে নিভে গেল সেই প্রদীপ। সকলকে একা করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা। এই কয়েকটা দিন ফাইটারের মতো চলেছেন আমাদের অভিনেত্রী আর এই লড়াইয়ের পুরো সময়টাই ছায়াসঙ্গী হয়েছিলেন, তার প্রেমিক সব্যসাচী (Sabyasachi)।
যদিও সব্যসাচী আর ঐন্দ্রিলার লড়াইটা মাত্র কয়েকদিনের নয়। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে একজন শারীরিকভাবে আর আরেকজন মানসিকভাবে লড়াই করে একে অপরের পাশে থেকেছেন নিস্বার্থভাবে। এই দীর্ঘ বছরের প্রতিটা সময়ে নিজের চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষটিকে কষ্ট পেতে দেখেছেন অভিনেতা সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলাকে নিজে হাতে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভেবেছিলেন হাসি মুখে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। তবে শেষ রক্ষা আর হল না।
তবে এই মুহূর্তে গোটা টলিউড ইন্ডাস্ট্রি তথা বাংলার মানুষ জানতে চান কেমন আছেন অভিনেতা? সেই খোঁজ নিতেই সব্যসাচীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন আমাদের সকলের প্রিয় অভিনেতা তথা সব্যসাচীর ভালো বন্ধু সৌরভ দাস (Sourav Das)। সূত্রানুযায়ী, কাল সৌরভের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন ‘একেবারে ভেঙে পড়েছে সব্য। এই পরিস্থিতিতে কেমনই বা থাকবে ও! সাথে খুব খারাপ অবস্থা ঐন্দ্রিলার পরিবারের। তবে আমি সব্যকে বারণ করেছি, যাতে ও নিজের এক ফোঁটা চোখের জলও না মাটিতে ফেলে। কারণ ঐন্দ্রিলার পরিবারকে ওকে সামলাতে হবে। ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে আর সব্যসাচী কখনোই কিছু লিখবে না। কারণ মিষ্টি’র কথাতেই ও নিজের লেখালিখি শুরু করেছিল।’
এছাড়াও অভিনেতা জানিয়েছেন, ‘এতদিন ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের যাবতীয় খোঁজখবর সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছিল সব্য। তবে আর নয়। যদি কেউ ভেবে থাকেন এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সব্য ফেসবুকে আর কোনও পোস্ট দেবে, তাহলে তা আর হবে না।’ আসলে আমাদের ঐন্দ্রিলা সম্পূর্ণ মিশে আছে সব্যসাচীর আত্মায়। সেই ২০১৭ সালে ঐন্দ্রিলার প্রথম ধারাবাহিক ‘ঝুমুর’-এর সেটে পরিচয় হয় তাদের। তারপর সেই প্রেমের গল্প এতদূর নিয়ে এসেছে ওদেরকে।’
প্রথম দেখাতেই তাদের প্রেম হয়নি। আসলে ঐন্দ্রিলা এক ঝলক দেখেই প্রেমে পড়ায় বিশ্বাসী ছিলেন না। অভিনেত্রী শুটিংয়ের ফাঁকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বসলে তখন সেখানে সব্যসাচীও আসতেন। ফোনালাপ থেকে ধীরে ধীরে কখন প্রেমালাপে পৌঁছে যায় তা ধরতেও পারেনি কেউ।
দীর্ঘ ৫ বছর চলতে থাকে তাদের নিখাদ প্রেমের সম্পর্ক। সাথে ছিল অসম্ভব চড়াই-উতরাই। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। খবর সূত্রে জানা গিয়েছিল, ডান দিকের ফুসফুসে টিউমার তৈরি হয়েছিল তার। তারপর আবারো শুরু হয়েছিল কেমো। এই দীর্ঘ কঠিন সময়টা তারা একে অপরের পাশে ছিলেন। তবে শেষমেশ হাল ছাড়তে বাধ্য হলেন ঐন্দ্রিলা। শেষ হয়েও হল না শেষ তাদের সুন্দর ভালোবাসার গল্প।