২০১৯ সালের পর থেকে সমস্ত দেশে অর্থনৈতিক দিক থেকে শুরু করে শিক্ষাগত দিক সবেতেই আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কোভিড ভাইরাসের কারণে মহামারীর প্রভাব আজও রয়েছে। এই ঘটনার বেশ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরেই শুরু হয়েছিল ইউক্রেন এবং রাশিয়ার ভয়াবহ যুদ্ধ। আর এইসবের ফলে বিভিন্ন দেশে তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। এভাবে তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথেই প্রত্যেক দেশে শুরু হয় অর্থনৈতিক মন্দা। এমনিতেও কোভিডের কারণে প্রত্যেকটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। এখনো পর্যন্ত যেভাবে নিত্যদিনের জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে প্রত্যেকটি দেশের অবস্থা হবে শোচনীয়।
সম্প্রতি, প্রতিবেশীদের শ্রীলংকার (Sri Lanka) অবস্থা খুবই খারাপ। তবে শুধু এই দেশই নয়, এবার এই দেশের মতই অবস্থা হতে চলেছে ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের (Pakistan)। বর্তমানে চীন সহ আরো বেশ কিছু ইসলামিক দেশের উপর নির্ভর করে এই দেশের প্রত্যেকটি মানুষের জীবনযাত্রা চলছে। তবে বোঝা যাচ্ছে এই দিন তারা বেশি দিন চালাতে পারবে না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, শীঘ্রই শ্রীলংকার মতই অবস্থা হতে চলেছে পাকিস্তানের। জানেন পাকিস্তানের অবস্থা ঠিক কতটা খারাপ? চলুন সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
রিপাবলিক অফ পাকিস্তানে ওই দেশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সবই হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই বিষয়ে অবস্থা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন যে বর্তমানে এই দেশ খুবই সংকটের সম্মুখীন হয়েছে দেশের সম্পূর্ণ বাস্তব চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ এবং ডিজেল পেট্রোল রান্নার গ্যাস থেকে শুরু সমস্ত দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এটা মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সমস্ত মানুষেরই জীবনযাত্রায় খারাপ প্রভাব ফেলছে।
২৪.৫ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি হার বেড়েছে এই দেশে। যা ধীরে ধীরে মাত্রারিক্ত বাজে প্রভাব ওই দেশের অর্থনীতির ওপর। জানেন পাকিস্তানি কোন জিনিসের দাম কত টাকা বেড়েছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক। পাকিস্তানি বর্তমানে মুরগির মাংসের দাম প্রতি কিলো ৬৫০ টাকা এবং আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে তা ৮০০ টাকা হবে। এছাড়াও রান্নার গ্যাসের দাম ১০ হাজার টাকা, তবে তাও সেটা ঠিকঠাক ভাবে পাওয়া যায় না। এই দামে জিনিসপত্র কিনে উঠতে পারছেন না মধ্যবিত্তরা।
এমন শোচনীয় অবস্থা যে প্লাস্টিকের মধ্যে ভরে নিয়ে আসতে হচ্ছে LPG। পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপদজনক হওয়ায় এই ক্ষতিকর কাজটিও করতে হচ্ছে এই দেশকে। বার্ষিক ভিত্তিতে দেখা গেলে ৬২ শতাংশ করে নিত্য প্রয়োজনীয় আটা, চিনি তেল ইত্যাদির দাম বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে গমের ক্ষেত্রে। এখানে কোটি কোটি মূল্যেও গম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মনে করা হচ্ছে আগামী সময়ে পাকিস্তানীরা দুবেলা খাবার খেতে পারবে কিনা তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় সকলেই।
এক থেকে যেমন খাদ্যের অভাবের সংকট দেখা দিয়েছে অন্যদিকে সম্প্রতি পাকিস্তান সরকারের কাছে বিরাট সমস্যা হলো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে। হঠাৎই একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার জারি করেছেন এক ধাক্কায় যেন বিদ্যুৎ খরচ কমানো হয়। নির্দেশনায় বলা হয়েছে যেন ৮ টার পর সমস্ত দোকান বাজার বন্ধ হয়ে যায়। কোন বিয়ের অনুষ্ঠান রাত্রি দশটার বেশি করা যাবে না। প্রকৃত অর্থে ওখানের দেশবাসীদের দিয়ে বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে ৬২ মিলিয়ন ডলার নিজেদের কাছে আনতে চাইছে পাকিস্তান।