Skip to content

২৫ বছরের নিঃস্বার্থ সেবার পুরস্কার 3 তলা বাড়ি ও সম্পত্তি, রিকশাচালকের নামে করলো বৃদ্ধা

রিকশাচালকের নামে একটি তিনতলা বাড়ি এবং সম্পূর্ণ সম্পত্তির মালিক করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন 63 বছর বয়সী এক মহিলা। স্বামীর পর মেয়েও মারা গেলে আত্মীয়-স্বজন সবাই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও 25 বছর ধরে রিকশাচালক নিঃস্বার্থভাবে তার সেবা করে আসছেন। এইজন্যই সেই রিকশাচালকের নামে ওই মহিলা তার সব সম্পত্তির মালিক করে দিলেন।

Minati Patnaik

টাকা-পয়সা,ধন-দৌলত ই প্রধান সম্পত্তি নয়, মানবতায় হলো প্রধান সম্পদ। এর একটি জীবন্ত উদাহরণ পাওয়া গেলো ওড়িশার কটক জেলা থেকে। এই ঘটনাটি সেই সমাজের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক প্রমাণিত হচ্ছে যেখানে একজন বৃদ্ধা মহানুভবতা এবং আভিজাত্য দেখিয়ে একটি তিনতলা বাড়ি এবং সম্পূর্ণ সম্পত্তি একজন রিকশাচালকের নামে করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ সেই রিকশাচালক 25 বছর ধরে ওই মহিলার নিঃস্বার্থভাবে সেবা করে চলেছে। ঐ বৃদ্ধার ধন-দৌলত সহ বাড়িঘরের মূল সম্পত্তির পরিমাণ 1 কোটি টাকার মতো।

 

এই গল্পটি 63 বছর বয়সী একজন মহিলা মিনাতি পট্টনায়কের। মিনাতি থাকেন ওড়িশার কটক জেলার সুতাহাটা এলাকায়। গত বছর স্বামী কৃষ্ণ কুমার পট্টনায়কের মৃত্যুর পর মেয়ে কোমলকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে শুরু করেন মিনাতি। স্বামীর মৃত্যুর ছয় মাস পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মেয়ে কোমলের মৃত্যুর খবর মিনাতিকে একেবারে অসহায় ও নিঃস্ব করে দেয়। এর ফলে তিনি সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে তার পরিবারের সদস্যরাও দূরে সরে যায়।

রিকশাচালক

ওই পরিস্থিতিতে রিকশাচালক নিঃস্বার্থভাবে মিনাতি পট্টনায়েককে সেবা যত্ন করেন। আজতাক এ একটি সাক্ষাৎকারে মিনাতি পট্টনায়েক বলেছিলেন যে, ” আমি আমার সমস্ত সম্পত্তি একটি দরিদ্র পরিবারকে দান করতে চাই। আমার মৃত্যুর পর যাতে কেউ তাকে সম্পত্তি নিয়ে হয়রানি করতে না পারে সেজন্য আমি আমার সম্পূর্ণ সম্পত্তি রিকশাচালক সামলের নামে বৈধভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

 

মিনাতি বলেন এই যে আমার বোন আমার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, এভাবে সম্পত্তি রিকশাচালককে দান করা যাবে না। মিনাতি বলেন, আমার মেয়ে কোমলের মৃত্যুর পর পরিবারের কেউ আমার খোঁজ খবর নেয়নি। এমনকি পরিবারের কোনো সদস্যও আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। গত 25 বছর ধরে মিনাতি পট্টনায়কের সমস্ত পরিস্থিতিতে পাশে থেকেছে।

 

মিনাতি বলেন, কোমল যখন ছোট ছিল এবং সে স্কুলে যেত, বুদ্ধ তার সম্পূর্ণ যত্ন নিতেন। বৃদ্ধা ও তাঁর পরিবার আমাকে সর্বদা সম্মান করেছে। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের চেয়ে বেশি কাজ করেছেন আমার পরিবারের জন্য। বৃদ্ধা বলেছেন যে আমি গত 25 বছর ধরে এই পরিবারের সাথে জড়িত। আগে বাড়ির মালিক বাবু ও মেয়ে কোমলের সেবা করতাম। আমি শুধু মিনতিজির পরিবারের সদস্যদেরই আমার রিকশায় চড়াতাম। মিনতি ম্যাডাম সবসময় আমাদের সাহায্য করেছেন।

 

বছরের পর বছর ধরে আমরা নিঃস্বার্থভাবে মিনতি জি এবং তার স্বামীর সাথে বাচ্চা মেয়ে কোমলের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখন এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র মিনতি জি বেঁচে আছেন এবং আমরা তার সম্পূর্ণ যত্ন নেব। সমস্ত সম্পত্তি আমাদের নামে করে দেওয়ার পেছনে তার মহৎ মনুষত্বের দিকটিই প্রকাশিত হচ্ছে। আমরা মিনতিজির কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

Share