এই বিয়ের মরসুমে অনেকেই বিয়ে করে নতুন জীবন এর সূচনা করেছেন। সেই সাথে কিছু মানুষ আছেন যারা তাদের বিয়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত এবং খুব শিগগিরই বিয়ে করতে যাচ্ছেন। যাইহোক, বিয়ের দিনটি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই খুব বিশেষ। ছেলে-মেয়েরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে খুবই কৌতূহলী এবং অনেক দিন আগেই তারা তাদের বিয়ের প্রস্তুতিতে লেগে পড়ে। প্রত্যেকেই তাদের বিয়েকে বিশেষ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করে।
বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে দেখা গেছে তাদের বিয়ের দিন হাজারো স্বপ্ন থাকে। মেয়েটির মাথায় অনেক কিছুই আসে। মেয়েরা তাদের বিয়ে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয়ে থাকে। যদিও অনেকবার দেখা গেছে যে মেয়েরা বিয়ের জন্য চাকরিও ছেড়ে দেয়। কিন্তু আজ আমরা আপনাদের এমন একটি ঘটনার কথা বলতে যাচ্ছি যেখানে কনে তার বিয়ের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান ছেড়ে সরাসরি চাকরির কাউন্সেলিং সেন্টার এ যান।
মণ্ডপে বসা কনের দাবি অনুসারে ভোর 5 টা তে বর সিথিতে সিঁদুর দেওয়ার পরেই কনে মণ্ডপ ত্যাগ করে চাকরি কাউন্সেলিংয়ে চলে যান। শুধু তাই নয়, সেখান থেকে তিনি সরকারি চাকরিও পেয়েছিলেন এবং ফিরে এসে তিনি খুশি মনে বিদায় নেয়। আসলে আমরা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডার রামনগরের বারাবাঙ্কির বাসিন্দা প্রজ্ঞা তিওয়ারির কথা বলছি, যার জন্য বিয়ের পাশাপাশি চাকরি ও দরকার ছিল।
প্রজ্ঞা তিওয়ারিকে তার নথিপত্র পরিচালনা করতে এবং হাতে তৈরি মেহেন্দিতে ফর্ম পূরণ করতে দেখা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রজ্ঞা তিওয়ারীর এমন একটি ছবি ভাইরাল হচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রজ্ঞা তিওয়ারীর চুলে মোগরা ফুলের গজরা,কব্জিতে চুড়ি, সিথীতে সিঁদুর আর হাতে চাকরির জন্য বিভিন্ন ডকুমেন্টস। প্রজ্ঞা তিওয়ারির বিয়ে বুধবার ছিল। স্বামীর কাছ থেকে সিঁদুর লাগিয়ে ভোর 5 টায় তিনি গোন্ডা বিএসএ অফিসের উদ্দেশে রওনা হন, যেখানে প্রজ্ঞা তিওয়ারীর কাউন্সেলিং হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এই সময় কাউন্সেলিং-এর নির্ধারিত তারিখ থাকায় প্রজ্ঞা তিওয়ারীর স্বামী মণ্ডপে বসে ছিলেন।
সেখানে প্রজ্ঞা তিওয়ারি লাইনে দাঁড়ান এবং তার কাগজপত্র চেক করান। প্রজ্ঞা তিওয়ারির বিয়ের পাশাপাশি চাকরি পাওয়াটাও খুবই প্রয়োজন ছিল। চাকরি পাওয়ার পর প্রজ্ঞার মুখে দ্বিগুণ আনন্দ দেখা যাচ্ছিল। প্রজ্ঞা বলেন যে, ক্যারিয়ার তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই সে তার বরকে তার জন্য অপেক্ষায় মণ্ডপে রেখে কাউন্সেলিং করতে এসেছে। সেখানে সবাই অপেক্ষা করছিল পাত্রী প্রজ্ঞা তিওয়ারি ফিরে আসার জন্য এবং আচার অনুষ্ঠান শেষে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবে সেজন্য সবাই প্রতীক্ষা করছিল। প্রজ্ঞা তিওয়ারি বিশ্বাস করেন যে তার স্বামী তার জন্য খুব লাকি। প্রজ্ঞার জীবনে তার স্বামী আসার পরই চাকরি পেয়েছিলেন।
প্রজ্ঞা সকল অভিভাবকদের কাছে তাদের মেয়েদের অনেক বেশি শিক্ষিত করার জন্য আবেদন করেছেন যাতে তারা স্বনির্ভর হতে পারে। প্রজ্ঞা তিওয়ারি আজ যে মর্যাদা অর্জন করেছেন তার সমস্ত কৃতিত্ব তিনি তার বাবা-মাকে দেন। মৌলিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রজ্ঞা তিওয়ারিকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন যে গতকাল বিয়ে হয়েছে এবং আজ চাকরি পেয়েছে এটা অনেক বড় ব্যাপার।
কাউন্সেলিং সেরে পুনরায় সে বাড়ি ফিরে গেছে বিয়ের অবশিষ্ট ক্রিয়াকর্ম পালন করার জন্য। প্রজ্ঞাকে বেসিক এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট, গোন্ডা নামক জায়গায় শিক্ষা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদি সত্যিকার অর্থে দেখা যায়, প্রজ্ঞার এই চিন্তাভাবনাটি আজ সমস্ত মেয়েদের গ্রহণ করা উচিত যাতে তারাও ক্ষমতায়িত হতে পারে। প্রজ্ঞা তিওয়ারির এই মহান মনোভাবকে সকলে স্যালুট করছেন।