বর্তমানে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে অনেক মানুষেরই চাকরি চলে গিয়েছে। নতুন চাকরি পাওয়াও এখন দুষ্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলস্বরুপ অনেক মানুষই এখন নতুন নতুন ব্যবসা বা লাভজনক চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে চাষের ক্ষেত্রে এমন একটি ফসলের চাষ করা উচিত, যা সারা বছর ধরেই ফলবে। আজ এখানে আমরা এমনই এক ফসলের চাষের সম্পর্কে আলোচনা করব যার চাহিদা শীতের পাশাপাশি সারা বছর ধরেই থাকে।
আদা (Ginger) এমন একটি ফসল যা সারা বছরই চাষ করা যায়। আদা সাধারণ মানুষের একটি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। চা থেকে শুরু করে বেশিরভাগ রান্নাতেই আদার বহুল ব্যবহার হয়। আদা ব্যবহার করে না, এমন পরিবার খুবই বিরল। আর এই আদা চাষ করে আপনি 15 লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন যা যেকোনো চাকরি করার চেয়ে অনেক লাভজনক। এই চাষে কেন্দ্র সরকারেরও সাহায্য পাওয়া যাবে।
আদা চাষের জন্য আগের ফসলের কন্দ ব্যবহৃত হয়। একটি আদাকে এমনভাবে ভেঙে নিতে হয় যাতে প্রত্যেকটি টুকরোতে 2-3 টি কান্ড থাকে। বীজ বপন করার আগে মাটিটিকে 2-3 বার চষে নিতে হবে। এরপর আদার ফলন ভালো করার জন্য মাটিতে প্রচুর পরিমাণে গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। আলাদা করে কিংবা পেঁপে গাছের সঙ্গে এই আদা চাষ করা যায়। বলাবাহুল্য, প্রতি হেক্টর জমিতে 2 থেকে 3 টন বীজ লাগে।
বেড় বানিয়ে এই আদা চাষ করতে হয়। 6-7 pH যুক্ত মাটি আদা চাষের জন্য উপযোগী। এই আদা চাষ প্রাকৃতিক বৃষ্টির উপর কিছুটা নির্ভরশীল। জমির মাঝে মাঝে জল নিকাশির ব্যবস্থা করতে হয়। মাটির নিচে 4-5 সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হয়। চাষের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যাতে দুটি গাছের মাঝে 4-5 সেমি দূরত্ব থাকে। এছাড়াও একটি সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব 30-40 মিটার হওয়া দরকার।
এভাবে 8 – 9 মাসের মধ্যেই ভালো আদা তৈরি হয়ে যাবে।তবে প্রতি হেক্টর জমিতে 7-8 লক্ষ টাকা খরচ হলেও প্রায় 150-200 কুইন্টাল আদা উৎপন্ন হয়।বাজারে এই আদা 80-120 টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। হিসেব করে দেখা গেছে, সমস্ত খরচ খরচা বাদ দিয়ে প্রায় 15 লক্ষ টাকা আয় করা যায় প্রতি হেক্টর জমিতে।