Skip to content

সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে বাস্তবের সেনা জওয়ান যশবন্ত সিং এর প্রেম কাহিনী, হাসতে হাসতে হয়েছিলেন শহীদ

  • by

আজ আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাত্র 21 বছর বয়সী জওয়ান যশবন্ত সিং রাওয়াত এর কাহিনী জানবো। যশবন্ত সিং রাওয়াত ছিলেন একজন ভদ্র স্বভাবের গাড়োয়ালি যুবক, নম্বর 4039009। এই ভারতীয় জওয়ান অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে 4 নম্বর গাড়োয়ান রেজিমেন্টে আছেন। ইনি তার রেজিমেন্ট এর ইউনিট কে সব সময় হাসি-ঠাট্টা গানে জমিয়ে রাখতেন। যশবন্ত সিং প্রতিদিন তার রেজিমেন্টে যাওয়া-আসার পথে দুই মনপা অপূর্ব  সুন্দরী কন্যার সঙ্গে দেখা হতো।

দুই যুবতী দেখতে অসম্ভব সুন্দর ছিল এবং তারা ছিল একে অপরের দুই বোন। একজনের নাম সেলা ও অন্যজন তার বোন নুরা। যশোবন্ত কে দেখে ওই দুই মনপা যুবতী তাকে ভালোবেসে ফেলে। গল্প এখান থেকেই শুরু হয়।

যেহেতু ভারতের পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী গুলিতে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা সেহেতু সেখানে মেয়েদের সিদ্ধান্তই প্রধান। তাই একদিন সেই দুই যুবতী নারী একসাথে যশোবন্ত সিং কে প্রেম নিবেদন করেন। এই প্রেম নিবেদনে যশোবন্ত সিং রাওয়াত অবাক হয়ে যাই এবং উত্তরে জানাই যে তিনি বিবাহিত বাড়িতে তার স্ত্রী আছে। কিন্তু মনপা উপজাতির মেয়েরা খুবই নাছোড়বান্দা হয়। তারা বলে ওঠে যশোবন্ত সিং বিবাহিত হলেও তাদের কোনো আপত্তি নেই। যশোবন্ত সিং এর স্ত্রী কে সেলা ও নুরা বলে যে যশোবন্ত সিং এর স্ত্রী কে তারা দুজন বড়দিদি হিসেবে সম্মান করবে। কিন্তু যশোবন্ত সিং তাদের কথায় কোনো মতেই রাজি হয়নি।

love story of Jaswant Singh Rawat

বন্ধুত্ব

যখন সেই দুই বোন দেখল যে যশোবন্ত সিং রাজি হলো না তখন তারা এক ফন্দি আটে। তারা প্রতিদিন যশোবন্ত সিং এর জন্য ভালো ভালো খাবার রান্না করে নিয়ে যেতে শুরু করল। এর ফলে ধীরে ধীরে সেই দুই বোনের প্রতি তার মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হল। কিন্তু এই ভালোবাসা ছিল সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের ভালোবাসা কোন প্রেমিক প্রেমিকার ভালবাসা নয়।

কিন্তু সেলা ও নুরা এ বিষয়টিকে অন্যভাবে নিতে থাকে। তারা প্রতিদিন যশোবন্ত সিং এর সাথে দেখা করার জন্য নদীর ধারে যেত। তারা ভেবে বসে যে যশোবন্ত সিং তাদের প্রেমের আচ্ছন্ন হচ্ছে। ব্যাপারটি বুঝতে পেরে যশোবন্ত সিং তাদেরকে ধমক দেন, এবং বারবার বোঝাবার চেষ্টা করলেও তারা বোঝে নি। কথাগুলিকে তারা হেসে উড়িয়ে দিতো।

যশবন্ত সিং রাওয়াত এর প্রেম কাহিনী

1962 সালের নভেম্বর মাস

এরপর থেকে গল্পের মোড় কিছু টা ঘুরতে থাকে। সময়টি ছিল 1962 সালের নভেম্বর মাস । ভারতের পূর্ব সীমান্তে বিভিন্ন সেক্টরে চীন যু’দ্ধের রণ’বাদ্য বাজানো শুরু করে। ভয়’ঙ্কর গুলি-গোলা চলতে থাকে। এদিকে যশোবন্ত সিং রাওয়াত ও অতি পরাক্রমের সাথে যু’দ্ধ চালিয়ে যায়। অন্যদিকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে দুই বোন সেলা ও নুরা প্রার্থনা করতে থাকে যেন তাদের যশবন্ত সিং এর কিছু না হয়।

এর কয়েক দিন  আগে নদীর ধারে বসে ছিল যশোবন্ত ও ওই দুই মনপা বোন। সে দেখে যে ভারতীয় সীমান্তের দিকে সৈন্যরা অ’স্ত্র নিয়ে ছুটছে। সেই মুহূর্তেই যশবন্ত সিং নিজের রাই-ফেল হাতে তুলে সেই উদ্দেশ্যে দৌড়াতে শুরু করে। পেছনে পেছনে দৌড়াতে শুরু করে ওই দুই বোন। অনেক বারণ করা সত্ত্বেও তারা যশোবন্ত সিং এর পেছনে ছুটতে থাকে।

এর আগেও চীনা সেনারা মনপা উপজাতির ছদ্মবেশে এসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিপুল ক্ষ’তি করেছে এর ফলে অনেক ভারতীয় সেনা শ’হীদ হয়ে যান। তবে ভারতীয় সেনার অসীম পরাক্রমের জন্য তারা সেই স্থান দখল করতে পারেনি। ফলে তারা চতুর্থবারের জন্য আক্র’মণ করে। তিন দিক থেকে চীনের সেনারা মেশি’নগান নিয়ে আসতে শুরু করে। এর ফলে যশোবন্ত সিং রাওয়াত এর 4 নম্বর গাড়োয়াল রাইফেল বিধ্বং’সী আক্র-মণের মুখে পড়ে। চীনা সেনারা আক্র-মণের ফলে ভারতীয় সেনার 162 জন জওয়ান ছত্র ভঙ্গ হয়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনা শহীদ হয়ে যান। এবং সাময়িক কালের জন্য ভারতীয় সেনাকে পিছিয়ে আসতে বলা হয়। এর ফলে ভারতীয় সেনারা পিছিয়ে আসে।

Jaswant Singh Rawat

কিন্তু পিছিয়ে আসেননি যশবন্ত

ভারতীয় সেনারা আদেশ অনুযায়ী পিছনে হাটতে শুরু করলেও এই অতি পরাক্রমী জওয়ান যশবন্ত সিং রাওয়াত পিছু হাঁটেননি। তিনি একাই তিনটি বাঙ্কার থেকে চিনা সেনার উপর ফায়া-‘রিং শুরু করেন। মূল আশ্চর্যের বিষয় যশোবন্ত সিং এর সাথে ছিল ওই দুই মণপা যুবতী বোন সেলা ও নুরা। যশোবন্ত সিং বারবার তাদের ফিরে যেতে বললেও তারা তার কথা শুনে নি। তারা বলে ওঠে বাচঁলে যশোবন্ত সিং এর সাথে বাঁচবে এবং মরলে তার সাথেই মরবে।

যশবন্ত সিং তিনটি বাঙ্কার এর এক বাঙ্কার থেকে অন্য বাঙ্কারে গিয়ে ফায়া-‘রিং করে। রাইফেলের ম্যাগা’জিন খালি হয়ে গেলে সেই দুই বোন ম্যাগা’জিন লোড করে দেয়। এইভাবে অতি কুশলতার সাথে যশবন্ত সিং রাওয়াত চিনা সেনাদের ধোকা দেয়। চীনা সেনারা ভাবে ওই তিনটি বাঙ্কার এ অনেক ভারতীয় সেনা মজুদ আছে। যশোবন্ত সিং এর নির্ভুল নিশানায় অনেক চীনা সেনা প্রা-ণ হারায়। এর ফলে চীনা সেনারা সামনে এগোতে ভয় পেয়েছিল।

যশবন্ত সিং রাওত

 

অন্যদিকে যশোবন্ত সিং বুঝতে পারে গোলাবা-‘রুদ শেষ হয়ে আসতে চলেছে। খুব শীঘ্রই চীনা সেনারা তার কৌশল ধরে ফেলবে। তাই যশোবন্ত সিং সেই দুই বোন সেলা ও নুরা কে সেই স্থান ত্যাগ করে গ্রামে ফিরে যেতে বলে। কিন্তু তারা প্রতিবারের মত এবারও যশবন্ত সিং এর কথা শুনল না। এইভাবে 72 ঘন্টা কেটে যায়। যশোবন্ত সিং রাওয়াত একাই চীনের রেড আ’র্মির এক হাজার সেনা কে ঠেকিয়ে রেখেছিল, এবং প্রায় 300 চিনা সেনাকে খতম করেছিল। অন্যদিকে এই 72 ঘণ্টায় ভারতীয় সেনারা যু’দ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল।

মনপা গ্রামবাসী

এই মুহূর্তে ঘটলো এক বিপদ। যে মনপা গ্রামবাসী যশবন্ত সিং, সেলা ও নুরা খাবারের যোগান দিতে আসতো তাকে চীনা সেনারা ধরে ফেলে। এবং তার কাছ থেকে চীনা সেনারা সমস্ত বিষয়টি জেনে নেয়, তারা জানতে পেরে যায় যে ওই তিনটি বা’ঙ্কার এ মাত্র একজন ভারতীয় সেনা রয়েছে। এবং সেই একজন ভারতীয় সেনা টিই একাই চীনের উপর হা’ মলা চালাচ্ছে। চীনা সেনা ও অফিসাররা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় এই ভেবে যে কিভাবে মাত্র একজন ভারতীয় সেনা লাগা’তার 72 ঘন্টা চীনের রেড আ’র্মির বি’রুদ্ধে কিভাবে যু’দ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

মাত্র একজন ভারতীয় সেনা 300 জন চীনা সেনা দের কিভাবে মা-রলো এই নিয়ে তারা হতভাগ। তারা আরও ভাবে যে মাত্র একজনের জন্য নিফা(অরুণাচল) তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তারপর চীনা সেনারা দেরি না করে 12 জন স্পেশাল কমান্ডো কে নির্বাচন করে এবং যশবন্ত সিং রাওয়াত কে মা-রার জন্য পাঠায়। রাতের অন্ধকারে সেই 12 জন কমান্ডো যশোবন্ত সিং এর বা’ঙ্কার কাছাকাছি এগিয়ে যেতে শুরু করে।

যশবন্ত সিং

17 নভেম্বর 1962

সময়টি 1962 এর 17 নভেম্বর, পূর্ব হিমালয় এর নতুন সূর্যের আভা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চিনা কামান্ডো রা আ’ক্রমণ চালায়। তিন দিন খোলা আকাশের নিচে প্রবল শীত , পরিশ্রম ও অনাহারে ক্লান্ত যশোবন্ত সিং ও দুই যুবতী কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই চীনা সেনারা গ্রে-নেড ছোড়ে। গ্রেনে-ডের স্প্লি’ন্টার এসে লাগে সেলার মাথায়। যশোবন্ত সিং এর চোখের সামনে সেলার দেহ গড়িয়ে পড়ে যায়। এইভাবে ভারতের ইতিহাসে 19 বছরের মনপা যুবতী সেলা শহীদ হয়ে যায় ।

ওই সময়ই যশবন্ত সিং গ্রে’-নেড দ্বারা আহত হলেও তিনি রাইফেল চালাতে থাকেন। এবং আটজন চীনা কমা-ন্ডো কে রাই’ফেল দিয়ে গুড়িয়ে দেন। যশোবন্ত সিং দেখে মেগাজিনে রাই’-ফেলের গুলি প্রায় শেষ, মাত্র একটি অবশিষ্ট রয়েছে। তখন সে নুরা কে সেই জায়গা ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করে। তখন নুরা শেষবারের মতো তার দিদি সেলা ও প্রেমিক যশোবন্ত সিং এর দিকে তাকায় এবং নিচে নামতে শুরু করে গ্রামের উদ্দেশ্যে।

২১ বছরের যশোবন্ত সিং রাওয়াত

এদিকে ভারতের তাওয়াং সীমান্তে একা পড়ে রইলেন 21 বছরের গারোয়ালি যুবক যশোবন্ত সিং রাওয়াত। গ্রে’-নেডের স্প্লি-ন্টার এ প্রবল ভাবে আহত। কাছে সেলার র-ক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। চারপাশ থেকে শোনা যাচ্ছিল চিনা সৈনিকের বুলে-টের আওয়াজ।

অবশেষে শেষবারের মতো ভারত মাতা কে স্মরণ করলেন এবং সেলার মৃ’ত-দেহ প্রত্যক্ষ করলেন, নাকি হয়তো ঘোলাটে চোখে গাড়োয়াল উপত্যকা এর দিকে তাকিয়ে ছিলেন তার মায়ের কথা স্মরণ করে। তারপর এক দুঃখ জনক সিদ্ধান্ত। রাই-‘ফেলের ম্যাগা’জিনের থাকা শেষ বু’লেট। যশোবন্ত সিং রাইফেলের নল টি নিজের গলার কাছে রেখে ট্রি-গারে চাপ দেন। এইভাবে 21 বছরের এই জাওয়ান বা-ঙ্কার থেকে গড়িয়ে পড়ে। উপত্যকায় বিলীন হয়ে যায় তার দে’হ।

অন্যদিকে পাহাড়ের আড়াল থেকে নুরা তার দিদি ও যশোবন্ত সিং কে করুন চোখে দেখে। হ্যা, নুরা এইবারও যশোবন্ত সিং এর কথা শোনেনি। এবার ও সে সেই স্থান ত্যাগ করেনি। সেও ম-রতে চেয়েছিল তার দিদি সেলা এবং যশবন্ত সিং এর সাথে। অবশেষে চীনা সেনারা নুরা কে ধরে ফেলে। তারপর তারা এই 17 বছরের নুরার উপর নি-র্মম অত্যা-চার চালায় এবং টেলিফোনের তার দিয়ে গ-লায় ফাঁ’স দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়।
এভাবে একজন গারোয়ালি যুবকের প্রেমে আবদ্ধ হয়ে দুই সুন্দরী যুবতী মনপা কন্যা ভারতমাতার চরণে নিজেদের প্রা-ণ উৎসর্গ করলেন।

Jaswant Ghar

পিছু হেঁটেছিল চিনা সৈ’ন্যদল

তাহলে কি চীনা সেনারা ভারতের দিকে এগোতে শুরু করেছিল? উত্তরটা হচ্ছে ‘ না’। যশবন্ত সিং রাওয়াত, সেলা ও নুরা দের জীবন দান ব্যর্থ হয়নি। ওই 72 ঘণ্টায় ভারতীয় সেনারা অনেক সময় পেয়ে গিয়েছিল এবং যু’দ্ধের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত হয়েছিল। ভারত প্রচুর গো-লাবা’রুদ ও সৈন্য নিয়ে এগোতে শুরু করে। ভারতের এই রূপ দেখে চীনা সেনারা পিছু হটতে থাকে। অবশেষে তাদেরকে ভারতের চাপে যু’দ্ধবিরতি করতে বাধ্য করা হয়। তবে যু’দ্ধ শেষ হওয়ার পর ও যশবন্ত সিং রাওয়াত এর দে’হ খুঁজে পাওয়া যায়নি, এবং তার 72 ঘন্টা ধরে মর’ণপণ লড়াই এর খবরও ভারতীয় সেনার কাছে ছিল না।

যেহেতু যশোবন্ত সিং রাওয়াত কে খুঁজে পাওয়া যায়নি সেহেতু ভারতীয় সেনারা ভেবেছিলো যে সে যু-দ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গিয়েছে। তাই যশোবন্ত সিং এর বিরুদ্ধে কোর্ট মা’র্শাল করার কথা ভাবা হচ্ছিল। একদিন রাত্রে যুদ্ধ’ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা জেনারেলের স্বপ্নে যশবন্ত সিং রাওয়াত রণ সাজে সজ্জিত হয়ে বলেন, ‘আমি কা-পুরুষের মত রণ’ক্ষেত্র ছেড়ে পালায় নি। আমি কি করে গেছি সেটা একবার চিনা সেনাদের দের কাছ থেকে জেনে নিও।

ভারতীয় সেনা ও চীন সে’নাদের ফ্ল্যা’গ মিটিং এ যশোবন্ত সিং রাওয়াত এর কাহিনী তুলে ধরা হয়। তার সাহসিকতার কাহিনী শুনে দুই বাহিনী সেনারা উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাই। ভারতীয় সেনা পাশাপাশি চীনা সেনারাও বীরত্বের জন্য যশোবন্ত সিং কে কুর্নিশ জানায়।

যশবন্ত সিং

বাবা যশবন্ত সিং

আজ ভারতীয় বাহিনীর সকল জওয়ান বাবা যশবন্ত সিং এর কাহিনী জানেন। যশবন্ত সিং রাওয়াত যেখানে শ’হীদ হয়েছিলেন সে জায়গাটার নাম রাখা হয় যশবন্তগড়। সেই জায়গায় যশোবন্ত সিং এর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংরক্ষিত করা হয়েছে। এবং তার কক্ষে এখনো 4 নম্বর গাড়োয়ান রেজিমেন্টের ছয়জন প্রহরী প্রহরায় থাকেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে সাথে চিনা সেনারাও বাবা যশোবন্ত সিং রাওয়াত কে স্বপ্ন দেখেন। আজও পাহাড় সীমান্তে ভারতকে বাবা যশবন্ত সিং রাওয়াত রক্ষা করে চলেছেন। এইভাবে রাই’ফেলম্যান যশোবন্ত সিং থেকে তিনি হয়ে যান বাবা যশোবন্ত সিং।

অমর হয়ে গিয়েছিলেন সেলা ও নুরা

অন্যদিকে দুই মলপা বোন সেলা ও নূরার জীব’ন দান ও ব্যর্থ হয়নি, অরুণাচল ভোলেনি তাদের জী’বন দান। দিরাং থেকে 40 কিলোমিটার দূরে 13,721 ফুট উচ্চতায় সেলার স্মৃতিতে তৈরি করা হয়েছে সেলা পাস ও সেলা লেক। এবং তার বোন নুরার স্মৃতিতে তাওয়াং এর আগে জং শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে 100 মিটার উচ্চতায় ভারতের একটি সুন্দরতম জলপ্রপাত এর নাম রাখা নুরানাং ফলস। বহমান নদীটির নাম রাখা হয়েছে নুরানাং। এইভাবে দুই মলপা বোন ভারতবাসীর কাছে চির স্মরণীয় হয়ে রয়ে গেল।

এভাবে আমরা জগৎবাসী তথা দেশবাসী দেখলাম কিভাবে প্রেমের জন্য জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে দেওয়া যায়। রাধা কৃষ্ণ, লায়লা মজনু, শিরি ফরহাদ এর প্রেম কাহিনী শুনেছি কিন্তু যশবন্ত সিং ও সেলা নুরা এর প্রেম কাহিনী এই সকলের থেকেও ঊর্ধ্বে উঠে গেছে। ছাপিয়ে গেছে সমস্ত প্রেম গাঁথা। একদিকে যেমন ভারত মাতার সেবক হিসেবে হাসিমুখে নিজের প্রা’ণ উৎসর্গ করেছে গাড়োয়ালি যুবক যশবন্ত সিং রাওয়াত, আর অন্যদিকে সেই গাড়োয়ালি যুবকের প্রেমে পাগল হয়ে নিঃস্বার্থভাবে প্রা’ণ দিয়ে দিল দুই অতি সুন্দরী যুবতী সেলা ও নুরা।

Share