প্রত্যেক দেশের সেনাবাহিনী সেই দেশের নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের ভারতের সেনাবাহিনী (Indian Army) এতটাই বিশাল যে প্রতিবেশী কোন দেশ ভারতের উপর আক্রমণ করার আগে শতবার ভাবে। আমাদের এই সেনাবাহিনীতে নেপালের গোর্খা (Gorkha) উপজাতির মানুষ লড়াই করে আসছেন সেই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকেই। বলাই বাহুল্য আমাদের এই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নেপালের এই উপজাতির সংখ্যা ব্যাপক আকারে রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আল্ট্রা ন্যাশনালিস্ট বা উগ্র জাতীয়তাবাদরা বলেন, ভারতের হয়ে কেন নেপালের মানুষ লড়বেন? কোন স্বার্থে এক দেশের মানুষ অন্য দেশের হয়ে লড়াই করবে? কোনদিন যদি দুর্ভাগ্যবশত নেপালের সঙ্গে ভারতের লড়াই হয় তাহলে এই সেনাবাহিনীরা কোন দেশের হয়ে লড়াই করবে?
অন্যদিকে লিবারেল বা উদার পন্থীরা বলেন, নেপালিরা যদি বিশ্বের নানা দেশে নিরাপত্তা বাহিনীতে কাজ করে থাকেন তাহলে কেন ভারতের হয়ে কাজ করবেন না ? একজন সেনা যে বাহিনীতে কাজ করেন তার শুধুমাত্র কাজ সেই বাহিনীর হয়ে লড়াই করা বা সেই দেশের হয়ে লড়াই করা। এর বাইরে সেই সেনার আর কোন পরিচয় থাকতে পারে না।
আজও ভারতীয় সেনা প্রতিবছর প্রায় ১৩০০ নেপালি গোর্খা (Gorkha) উপজাতিকে রিক্রুট করে থাকে ইন্ডিয়ান আর্মিতে। এছাড়াও ব্রিটিশ আর্মি এবং সিঙ্গাপুর পুলিশের জন্য নেপাল থেকে সেনাদের বাছাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য দেশের মানুষ হলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীতে (Indian Army) নেপালীদের আনুগত সবসময় থাকে চোখে পড়ার মতো।
আরও পড়ুন: জিৎ, প্রসেনজিৎ নাকি দেব এই ৩ টলিউড সুপারস্টারের মধ্যে কে সবচেয়ে ধনী?
এই গোর্খা উপজাতিদের ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করার অন্যতম একটি কারণ হলো, যুদ্ধক্ষেত্রে গোর্খা (Gorkha) শত্রুপক্ষের সবথেকে বেশি ভয়ের কারণ হয়ে থাকে। এই নেপালিরা প্রচুর পরিশ্রমী হন এবং দেশের প্রতি আনুগত্য হন তাই অন্য দেশের মানুষ সহজে পেড়ে ওঠে না এই সেনাদের সঙ্গে। আপনারা হয়তো জানেন না ভারতের সৈন্য ইতিহাসে একমাত্র ফিল্ড মার্শাল শ্যাম মানেকেশ নিজে ছিলেন গোর্খা বাহিনীর সদস্য। মৃত্যুমুখেও তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন দেশের জন্য। এমনকি ১৯৬৭ সালে সিকিমে ভারত-চীন সংঘর্ষে এক গোর্খা সেনা একাই পাঁচজন চিনা সেনাকে শেষ করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: সারা জীবন হাসিয়েছেন অপরকে, জনি লিভারের ব্যক্তিগত জীবন শুনলে চোখে আসবে জল
ঠিক এই কারণে যে সেনাবাহিনীতে গোর্খা (Gorkha) উপজাতির মানুষ বেশি থাকে সেই সেনাবাহিনীকে ভয় পায় চীন থেকে পাকিস্তান প্রত্যেক দেশ। উচ্চতায় কম হলেও এই সেনাদের ফিটনেস এবং লড়াকু মানসিকতার জন্যই প্রত্যেকটি দেশ নিজেদের সেনাবাহিনীতে বেশি করে গোর্খা উপজাতির সেনাদের রিক্রুট করেন।