কেন্দ্রের মোদি সরকার বর্তমানে জোড়া দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত। রাফেল থেকে Covaxin দুর্নীতির জোড়া ফলায় বিপর্যস্ত কেন্দ্র সরকার। ব্রাজিলের Covaxin কেনার চুক্তি ঘিরে দুর্নীতির শোরগোল হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে কংগ্রেসকে বিরোধী দলগুলোকে এবং অন্যদিকে ফ্রান্সের নতুন করে রাফেল বিতর্ক অস্বস্তিতে ফেলেছে মোদি সরকার ও তার দলকে। ফ্রান্সের বিচার বিভাগ ফরাসি সংস্থা Daso Aviation এর তৈরি রাফেল যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে মোদি সরকারের করা চুক্তি এর তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে ব্রাজিলে আবার ভারত বায়োটেক ICMR এর কোভিড প্রতিষেধক Covaxin কেনার চুক্তি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বিরোধী পাটিরা বিজেপি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তবে সরকার এখনো পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি। তবে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এ বিষয়ে কেন্দ্র কে মুক খুলতে হতে পারে।রবিবার সিপিএম এবং গতকাল কংগ্রেস রাফেল চুক্তি তে যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) মারফত তদন্তের দাবি তুলেছে।
বিরোধী দলের প্রশ্ন কেন্দ্র সরকার নীরব কেন? ফ্রান্সের আদালত এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তবে বিজেপি সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় কে ঢাল করছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এই মামলার গেলেও তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গোগোই এর বেঞ্চ এই রাফেল চুক্তিতে তদন্তের নির্দেশ দেননি। বিচারপতির অবসরের পর রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে ব্যবহৃত করা হয়। এই বিষয়টিকে কংগ্রেস কটাক্ষ করেছেন।কংগ্রেস বলেছে রাজ্যসভা এর আসনের লোভ দেখিয়ে JPC কে বাগে আনা যাবে না।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে প্রশ্ন করেন,” মোদি সরকার কেন JPC তে নারাজ? অপরাধবোধ? বন্ধুদের বাঁচানো? JPC এর রাজ্যসভার আসন এর দরকার নেই না কি এর সবটাই ঠিক!” রাফেল চুক্তি তে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ঘুষের অভিযোগের ফ্রান্সে তদন্ত শুরু হয়েছে। মোদি সরকারের আমলে 36 টি রাফেল কিনতে 59 হাজারকোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। অন্যদিকে ব্রাজিলে অবশ্য 2 কোটি ডোজ Covaxin কেনার চুক্তিতে আর্থিক লেনদেনের আগের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।
Covaxin
বিরোধীদের অভিযোগ Covaxin ব্রাজিলে ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই 30 কোটি ডলারের ওই চুক্তি করে ফেলেছিল প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসনারো এর প্রশাসন। কেন ফাইজার এর থেকে বেশি দামে এবং ছাড়পত্র পাওয়ার আগে বোলসনারো এর প্রশাসন ভ্যাকসিন কিনতে উৎসাহী হয়েছিলেন? অবশ্য তারপরে তা বাতিল হয়ে যায়। ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। Bharat biotech এর দাবি, নিয়ম মেনেই চুক্তি হয়েছিল।
কিন্তু এ বিষয়েও মোদী সরকারের জবাবদিহি চাইছে কংগ্রেস। মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতের বক্তব্য, ‘‘শুধু বেসরকারি সংস্থা ভারত বায়োটেক নয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান ICMR-ও টিকা (Covaxin) তৈরিতে অর্থ ঢেলেছে। ফলে করদাতাদের টাকা এখানে জড়িত। তা কাজে লাগিয়ে মুনাফা লোটা হচ্ছে কি না, তার তদন্ত দরকার। এ বিষয়ে অবশ্যই সরকার কে মুখ খুলতে হবে। এ ছাড়াও কংগ্রেসের আরো এক মুখপাত্র পবন খেরার প্রশ্ন করেন, ” ফ্রান্সে তদন্ত হচ্ছে কিন্তু ভারতের রাফেল কেনার জন্য করদাতাদের টাকা খরচ হয়েছে তাহলে এদেশে কেন তদন্ত হবে না?”
এছাড়াও তিনি আরো বলেন,” দেশের নিরাপত্তার স্বার্থ কে প্রধানমন্ত্রী একটুও গুরুত্ব দেন না। তিনি শুধু নিজের শিল্পপতি বন্ধুদের ফায়দা করিয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেন।” এই বিষয়ে সংসদে কংগ্রেস সরব হবে বলে দাবি করেন। এতসব অভিযোগ হওয়ার পরও মোদী সরকার একদম চুপ। তারা মুখ খুলতে এখন নারাজ। তবে সরকারের দলীয় কর্মীরা এ বিষয়ে পাল্টা আক্রমণ করেছেন তারা বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে রাহুল গান্ধী অপমান করছেন।