মসলার জন্য আমাদের ভারতবর্ষ সারা বিশ্বে বিখ্যাত। এজন্য ভারতকে মসলার দেশ বলা হয়। ভারতের মসলা যে কোন খাবারকে স্বাদে ও সুগন্ধে ভরিয়ে তোলে। বর্তমানে বেশিরভাগ কৃষক বিভিন্ন ধরনের মসলা চাষে উৎসাহী হয়েছেন। কারণ মশলা চাষে কম সময়ে বেশি অর্থ মুনাফা হয়। আজ আমরা যে মসলাটির কথা বলব যা চাষ করে আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
আমরা লবঙ্গ চাষের(Clove farming) কথা বলছি। লবঙ্গ এমন একটি মসলা যা খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ আনে। অন্যদিকে লবঙ্গ ঔষধ হিসেবেও ব্যবহার হয়। প্রতিদিন লবঙ্গ সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। খুব সহজেই আপনি লবঙ্গ চাষ করতে পারেন। এর জন্য দরকার বেলে মাটি যাতে সেচের জন্য খুব কম জল প্রয়োজন হয়। প্রথমদিকে একবার যত্ন সহকারে লবঙ্গ গাছ লাগালে তা প্রায় 100 বছর পর্যন্ত বাঁচে।
লবঙ্গ চাষের জন্য 25 থেকে 32 ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন। লবঙ্গ চাষ করার জন্য প্রথমে আপনাকে বাজার থেকে লবঙ্গ বীজ কিনে আনতে হবে । সেই বীজ মাটিতে বপন করার আগে 8 থেকে 10 ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেটিকে ক্ষেতে জৈব সার যুক্ত মাটিতে বপন করে দিতে হবে। দুটি বীজ মাটিতে বপন করার দূরত্ব 10 থেকে 15 সেন্টিমিটার রাখতে হবে এবং তা এক লাইনে বপন করতে হবে।
তারপর সেই মাটিতে নিয়মিত জল দিতে হবে। লবঙ্গ চাষের জমিতে জল জমতে দেওয়া চলবে না। জল জমলে লবঙ্গ গাছ পচে যায়। এছাড়াও লবঙ্গ চাষ করার জমিতে প্রতি চার-পাঁচ বছর অন্তর অন্তর জৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। লবঙ্গ গাছ খুব বেশি রোদ সহ্য করতে পারেনা । তাই সব সময় লবঙ্গ চাষ ছায়াময় ও বায়ু চলাচলযুক্ত জমিতে চাষ করতে হয়। লবঙ্গ বীজ থেকে অঙ্কুর হতে প্রায় দেড় মাসের মতো সময় লাগে।
তারপর লবঙ্গ গাছে ফুল আসে। এবং তারপর পাঁচ বছরের মধ্যে ফল উৎপাদন শুরু হয়। লবঙ্গ গুলি প্রাথমিক ক্ষেত্রে গুচ্ছাকারে তৈরি হয় এবং তা লাল ও হালকা গোলাপি রঙের হয়। হাত দিয়ে ঘোষে সেই উপরের আস্তরণ সরালে বাদামী রঙের লবঙ্গ পাওয়া যায়। লবঙ্গ ফল শুকিয়ে গেলে তার ওজন 40 শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় এবং তারপর সেটিকে রোদে শুকোতে দিলে তার ওজন 50 শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
ভারতে লবঙ্গের চাহিদা প্রচুর। তাই চাষীরা এটি চাষ করতে বিশেষ আগ্রহী এবং এর থেকে প্রচুর মুনাফা পাওয়ার অর্জন করা যায়। বহু বড় বড় টুথপেস্ট কোম্পানি চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি কাঁচা লবঙ্গ কিনে নেয়। লবঙ্গ চাষের পর তা বাজারে বিক্রি করলে এক হাজার টাকা প্রতি কেজিতে দাম পাওয়া যায়।