বিচ্ছু (The scorpion) এমন একটা প্রাণী, যা দেখলে প্রথমেই সকলের মনে আসবে, ‘এটি অতীব ভয়ঙ্কর একটা প্রাণী, যদি কামড়ে দেয়।’ এটি যদি দংশন করে তাহলে প্রচন্ড ব্যথার সৃষ্টি হয় এবং সাথে জীবননাশেরও ঝুঁকি থাকে। তবে সব বিচ্ছু জীবনের জন্য ক্ষতিকর হয়না। তবে তাদের প্রতি মানুষের একটা ভয় কাজ করতেই থাকে। তবে এই প্রতিবেদনটি পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন এখানে বিষয়টি সম্পূর্ণই উল্টো। কথাটি শুনতে অবাক লাগছে তো? তবে এটা সত্যি। একটি ঘরের ভিতর শতশত বিচ্ছু তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে এবং এক ব্যক্তি তাদের বিক্রয় করছেন।
এই ব্যক্তি শুধু বিচ্ছু’দের লালন-পালন করে তা নয়, তা বিক্রয়ের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ অর্থ উপার্জন করে। এই ব্যক্তি তুর্কির একজন কৃষক। এটি একটি সত্য ও বাস্তব ঘটনা। চাষের জায়গাটির নাম স্করপিয়ন ফার্মিং (Scorpion Farming)। রয়টার্সের একটি নিবন্ধ থেকে জানা যায় তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে সানলিউরফা অঞ্চলে অবস্থিত একটি গবেষণাগারে প্লাস্টিকের বাক্সে আটকে রাখা আছে হাজার হাজার বিচ্ছু’কে। তাদের সেই স্থানে লালন-পালন করা হয়, সুরক্ষিতভাবে রাখা হয় এবং তার বিনিময়ে বিষ বের করে নেওয়া হয়।
এই স্করপিওন ফার্মের মালিকের নাম ‘মেটিন ওরেনলার (Mateen Orenler)’। এই বিচ্ছু’র বিষ মানুষের জন্য যেমন বিপদজনক তেমন অন্যদিকে উপকারীও। এই বিষ থেকে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ (Medicine is made from scorpion venom)। তুর্কির পরীক্ষাগারে, বিচ্ছু থেকে খুব যত্ন সহকারে, সাবধানে বিষ বের করা হয়। ঠান্ডা করা হয় এবং তারপর গুঁড়ো করে বিক্রি করা হয়। এই ব্যক্তির খামারে ২০,০০০ টিরও বেশি বিচ্ছু বর্তমান। পরীক্ষাগারে একটি বিচ্ছু থেকে মোট ২ গ্রাম বিষ নির্গত করা হয়।
এই খাবারটি তৈরি হয়েছিল ২০২০ সালে এবং এখানে Androctus Turkiyensis প্রজাতির বিচ্ছু পালন করা হতো। ওরেনলার জানিয়েছেন, ‘ আমরা বিচ্ছু লালন পালন করি এবং তা থেকে বিষ বের করি এবং সাথে সাথে তা গুঁড়ো করে ইউরোপে পাঠানো হয়। বিচ্ছুর বীজ তৈরি বিপজ্জনক হলেও এতে অনেক উপার্জন করা যায়। Orenler জানিয়েছেন, ১ লিটার বিচ্ছু’র বিষের দাম ১০ মিলিয়ন অর্থ্যাৎ ৭৯.০৮ লক্ষ টাকা। এই বিষ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ড এর মতো দেশেও রপ্তানি করা হয়।