আমাদের অনেকেরই মনে একটি ধারণা আছে যে সাধারণত যারা বাড়ি বাড়ি কিংবা রাস্তায় পণ্য বিক্রি করেন, তারা তাদের পণ্যসামগ্রী কখনোই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন না।
তবে আজ এই প্রতিবেদনে আপনাকে এমন এক ব্যক্তির গল্প বলব যিনি এক সময় রাস্তাঘাটে পণ্য বিক্রয় করতেন তবে আজ তিনি নিজের পরিশ্রমের জোরে কোটি টাকার কোম্পানির মালিক।
এভাবেই তার চাকরি জীবন শুরু হয়
এই গল্পটি কলকাতার (Kolkata) এক সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী আসিফ রহমানের (Asif Rahman)। যিনি তার জীবনের প্রথম চাকরিটাই ডোর টু ডোর সেলসপারসন হিসেবে করেছিলেন। আরবি ভাষায় দক্ষতা সম্পন্ন তার বাবা ছিলেন একজন পাটকল শ্রমিক এবং মা গৃহিণী ছিলেন। তিনি খুব ছোট বয়স থেকেই কাজ খুঁজতে থাকেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার পর চাকরি খোঁজার সময় তিনি প্রথম চাকরি পান কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি দোকানে। সেখানে তিনি সেলসম্যান হিসাবে ঘরে ঘরে গিয়ে কার্পেট বিক্রি করতেন।
দোকানে ডেকে তাকে এ কাজের প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি শারীরিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে জেনেও এই কাজ করতে নিজেকে বিরত করেননি। তিনি মনে করতেন সব ধরনের কাজই সমান। কাজে কোনও ছোট বড় ভেদাভেদ নেই। কোন কোন সময় অত্যাধিক অপমানের সহ্য করতে হয়েছে তাকে। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। আসিফ ধীরে ধীরে কাজ শিখতে থাকেন এবং একসময় এই কার্পেট ব্যবসার কাজে, ভীষণ পারদর্শী হয়ে ওঠেন। নিউইয়র্কের একটি কার্পেট কোম্পানিতে ২০০৩ সালে তিনি কাজ করা সুযোগ পান এবং সেখান থেকেই তার ভাগ্যের পরিবর্তন হতে শুরু করে।
শুরু করলেন নিজস্ব ব্র্যান্ড
নিউইয়র্কের কম্পানির সঙ্গে তিনি দীর্ঘ ৮ বছরের মেয়াদে একটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির মাত্রায় কার্পেট শিল্পের ব্যবসায় নিজের দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। বড় বড় কোম্পানির লোকেদের সাথে বেশ যোগাযোগও তৈরি হয়েছিল তার।
একসময় তিনি বুঝতে পারেন তিনি এই ব্যবসায় অত্যন্ত দক্ষ হয়ে উঠেছেন এবং তখন তিনি এই কার্পেট নিয়ে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। চালু করেন তার ‘ইনসাইন কার্পেটস’ কোম্পানি (Insigne Carpets)।
খুব তাড়াতাড়ি তিনি নিজের অফিসে মুম্বাইয়ের তাজমহল পেলেস হোটেল থেকে বড় অর্ডার পেয়েছিলেন। আইএইচসিএলের সরবরাহকারীদের তালিকায় আসিফকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, বেশ কিছু অনুমতি নিয়েছিলেন সেখানকার কর্তৃপক্ষ। কারণ কোন সরবরাহকারীকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক কঠোর নিয়মের ব্যবস্থা আছে। তারপর থেকে এই ইনসাইন কার্পেট ক্রমশ বাড়তে থাকে। এছাড়াও এই কোম্পানির ভারত ও চীনে উৎপাদন সুবিধা রয়েছে।