যুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে কামান নামের অস্ত্রটি। একসময় শত্রুদের হাত থেকে নিজেদেরকে বাঁচাতে তরবারির পাশাপাশি ব্যবহার করতো কামানের গোলা। যে সময় প্রথম বিশ্বের সব থেকে বড় কমানটি ব্যবহার করা হল, সেই সময় এই কামানটিকে এক মারাত্মক যন্ত্র হিসাবে বিবেচিত করা হয়েছিল। ভারতে একটি অনুরূপ কামান আছে যার গোলা একবার ব্যাবহার করা হয়েছিল ৪০০ বছরের মধ্যে। এই বিশ্ব বিখ্যাত বিশালাকৃতি কামানের নাম ‘জয়বান’ (Jaivana)।
জানা যায়, ১৩-১৪ শতকের মধ্যে শুরু হয়েছিল এই কামানের কাজ। ইউরোপে ১৩১৩ খ্রিস্টাব্দে এই কামান ব্যবহার হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পানিপথের প্রথম যুদ্ধে এই কামান ব্যবহার করা হয়েছিল। একই সাথে ভারতেও এমন কামান রয়েছে যা বিশ্বের বৃহত্তম কামানের মর্যাদা পেয়েছে। জয়পুরের দূর্গে রাখা হয়েছে এই কামানটি। জয়গান দূর্গে ১৭২০ সালে এই বিশালকৃতি কামানটি স্থাপন করা হয়েছিল। জয়পুর দূর্গের প্রশাসক রাজা জয় সিং তৈরি করেছিলেন এই কামানটি। রাজ্যের নিরাপত্তার কারণে এই কামানের সৃষ্টি করেন তিনি।
৫০ টন ওজনের এই ভারী কামানটি ব্যবহৃত হয়নি আর কোনও যুদ্ধে। এই কামানটি চার ফুট চাকাযুক্ত দুচাকার গাড়ির ওপর রাখা হয়েছে।
৫০ কেজি গোলা এই কামানে ব্যবহার করা হয়। যার ব্যারেলের দৈর্ঘ্য ৬.১৫, ব্যাস ১১ ইঞ্চি, ব্যারেল পুরুত্ব ৮.৫ ইঞ্চি। জয়পুরেই এই কমান তৈরি করার জন্য কারখানা তৈরী হয়েছিল। একটি বিশেষ ছাঁচে ঢালাই করা হয়েছিল এই কামান।
এই কামান থেকে গোলা ছুঁড়লে তা ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চাকসু নামে একটি শহরে গিয়ে পড়ে। পড়া মাত্রই সেই জায়গায় পুকুর তৈরি হওয়ার মতো বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। ওই শহরের যে পুকুরটি তৈরি হয়েছিল তা এখনও স্থানীয় লোকেরা ব্যবহার করে।