অজানা বিষয় কে জানার কৌতূহল মানুষের বরাবরই। আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে মানুষের খাদ্যাভাস জীবনযাত্রা কেমন ছিল তা সকলেরই জানতে ইচ্ছে করে। আর এইসব বিষয়গুলি জানতে সাহায্য করেন ঐতিহাসিক ও প্রত্নবিদরা। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত গবেষণা ও খোঁজ চালাচ্ছেন আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগেকার মানুষের জীবনযাত্রা জানার জন্য। আর এইসব বিষয় জানার একমাত্র উপায় হল মাটি খুঁড়ে সেই যুগের সমসাময়িক কিছু জিনিস হাতে পাওয়া।
বিজ্ঞানীদের এমনই একটি জিনিস হাতে পড়েছে যার সাহায্যে আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগেকার মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কি সেই জিনিস আসুন বিস্তারিত জেনে যাক। জীবাশ্মের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বহু অজানা তথ্য পেয়ে থাকেন। বলতে গেলে ইতিহাস কে জানার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো জীবাশ্ম। সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল ইংল্যান্ডের স্টোনহেঞ্জ শহর থেকে কয়েক মাইল দূরে ডারিংটন ওয়াল নামের একটি জায়গা থেকে প্রাচীনকালের একটি জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন হতে পারে কিসের জীবাশ্ম গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন? গবেষকরা ডরিংটোন ওয়াল নামক স্থান থেকে প্রাচীনকালের মানুষ ও কুকুরের মলের জীবাশ্ম পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা মল পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন আজ থেকে 5000 বছর আগে মানুষের খাদ্যাভাস কি রকম ছিল। বিজ্ঞানীদের অনুমান জীবাশ্মটি নিওথিলিক যুগের।প্রাচীন এই জীবাশ্ম গুলি বিজ্ঞানীরা অক্ষত অবস্থায় পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা মানুষ ও কুকুর মিলিয়ে মোট 19 টি মল খুঁজে পেয়েছেন।
মলের জীবাশ্ম গুলো পরীক্ষা করে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে এসেছে। পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ব্রিটেনের ওই অঞ্চলের লোকগুলি পশুর হৃদপিণ্ড যকৃত ও অন্যান্য অঙ্গ খেতেন। তবে সে সমস্ত জিনিস গুলি তারা রান্না নয় বরং খাঁচায় খেতেন। মোর গুলির মধ্যে টেপ ওয়ার্ম ডিম এর উপস্থিতি বিষয়টিকে তুলে ধরছে। অন্যদিকে কুকুরের মলের যে জীবাশ্ম পাওয়া গেছে সেগুলি জার্মান শেফার্ড কুকুরের। সেই মল গুলিতে এক ধরনের ক্ষতিকর ফিতাকৃমির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এই গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ পিয়ার্স মিচেল উল্লেখ করেছেন এই জীবাশ্ম গুলি স্টোনহেঞ্জের খুব কাছাকাছি অবস্থিত এবং আজ থেকে 2500 যারা স্টোনহেঞ্জ নির্মাণ করেছিলেন তারা এখানে বসবাস করতেন। তখনকার দিনে মানুষরা গরুর ও শূকরের মাংস খেতেন এবং সেগুলি মাটির পাত্রে তারা রান্না করতো। কিন্তু ভালোভাবে সেগুলি তারা রান্না করতে পারত না এর ফলে বিভিন্ন ক্ষতিকর ফিতাকৃমি গুলি অক্ষত অবস্থায় থেকে যেত, এবং সেইগুলিই মলে লক্ষ্য করা গেছে।