নারীশক্তি অসামান্য নিদর্শন দেখা গেল ওড়িশায়। নিজস্ব দক্ষতায় ফের প্রমাণ করে দিলেন নারী জাতীর ক্ষমতা। আমাদের দেশে নারীরা সর্বদাই অবহেলিত ও বঞ্চিত। কিন্তু ধীরে ধীরে নারী শক্তির উত্থান সমস্ত নারীদের সমাজে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হচ্ছে। ওড়িশার সামান্য আশা কর্মী মাতিলদা কুল্লু অসাধারণ প্রতিভার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে বর্তমানে চর্চিত। আসুন ওড়িশার ওই মহিলার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রতিবছর দেশের প্রভাবশালী মহিলাদের একটি তালিকা তৈরি করে থাকে ফোর্বস ইন্ডিয়া ম্যাগাজিন। অদম্য মানসিক জোর প্রতিভার দ্বারা ওড়িশার এক সামান্য আদিবাসী মহিলা আশাকর্মী মাতিলদা কুল্লু ফোর্বস ইন্ডিয়া এর ওই তালিকায় নিজের নাম নথিভুক্ত করেছেন। যে তালিকায় রয়েছেন ব্যাংকার অরূন্ধতি ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে অভিনেত্রী রসিকা দুগগলের মত প্রভাবশালী মহিলারা।
প্রায় ১৫ বছর ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার গর্গডবহল গ্রামে কাজ করে চলেছেন মাতিলদা কুল্লু। গ্রাম মানেই কালো জাদু, অন্ধবিশ্বাস এর আঁতুড়ঘর। এই বিষয়গুলি মুছে ফেলা এককথায় অসম্ভব। কিন্তু সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন মাতিলদা কুল্লু। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কালো জাদু, অন্ধবিশ্বাস এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ওই আশাকর্মী মহিলা।
মাতিলদা কুল্লু এর বক্তব্য, গ্রামে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তার এর পরিবর্তে সর্বপ্রথম নিয়ে যাওয়া হতো ওঝার কাছে। সেই গ্রামে ভ্রান্ত ও অন্ধ বিশ্বাস ছিল চরম পর্যায় এ। এই সব বিষয়গুলির বিরুদ্ধে মানুষদের তিনি সচেতন করতে গেলেই বহু সমস্যার সম্মুখীন হন। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি।
15 বছর কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই করে মাতিলদা কুল্লু গ্রামবাসীর মন থেকে অন্ধবিশ্বাস মুছে দিতে সফল হয়েছেন। গোটা ওড়িশা জুড়ে প্রায় ৪৭ হাজার টিকাকর্মী থাকলেও তিনি একাই নিজে দায়িত্ব নিয়ে গোটা গ্রাম ঘুরে সব দায়িত্ব পালন করতেন। করোনা মহামারীর সময় নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা প্রদান করেছেন। মাসিক পারিশ্রমিক পেতেন মাত্র 4500 টাকা। মাতিলদা কুল্লু কে তার অদম্য সাহস ও কঠোর পরিশ্রম এর জন্য স্যালুট। মহিলাদের শক্তি কতটা হতে পারে তিনি তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।