কোন ব্যক্তি যদি কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার সাথে যদি কোন কাজ করেন তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি একদিন না একদিন সফল হবেনই তাতে কোন সন্দেহ নেই। আজ আমরা এমন এক ব্যক্তির কথা বলব যিনি মাত্র 12 বছর বয়সে বাবার ছোট দোকান এর কাজ সামলাতে শুরু করেন। আর এখন তিনি 18 কোটি টাকার একটি কোম্পানির মালিক। কিভাবে এই পথ তিনি অতিক্রম করেছেন আসুন সেটি জেনে নেওয়া যাক।
আমরা যার কথা বলছি তিনি হলেন তামিলনাড়ুর এর বাসিন্দা সুরেশ চিন্নাসামি।সুরেশ ‘সামি’স দোসাকল’ নামে একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁর চেইন চালান। এটি দক্ষিণ ভারতে খুব বিখ্যাত। বর্তমানে সুরেশ চিন্নাস্বামী একজন অত্যন্ত ধনী ব্যবসায়ী তে পরিবর্তিত হয়েছেন। তারই সফলতার পেছনে শুধু তার কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা ই কাজে লেগেছে।
প্রথমে সুরেশ 12 বছর বয়সে তার বাবার কাজে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে কাজ করা শুরু করেন। সালটা ছিল তখন 1979। সুরেশের বাবার রাস্তার ধারে একটি ছোট্ট খাবারের দোকান ছিল। সেই দোকানে অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে সুরেশ তার বাবাকে সাহায্য করত। বাবা ও ছেলে দুজনেই পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের ওই খাবারের দোকান টা কে ভালো রকম জমজমাট করে তোলেন। তারপর তার বাবা সুরেশ এর জন্য একটি নতুন দোকান খুলে দেওয়ার কথা ভাবেন।
দোকানে কাজ করার সাথে সাথে সুরেশের চলতে থাকে পড়াশোনা। প্রথমে দশম শ্রেণীতে পাস করেন তারপর দ্বাদশ শ্রেণী ও পরে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন সুরেশ। তারপর মাদ্রাজ হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে প্রফেশনাল কোর্সও করেন। সুরেশ তার পড়াশোনা উপভোগ করতে শুরু করেছিলেন, তাই তিনি 2001 থেকে 2003 পর্যন্ত মার্কেটিংয়ে MBA ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। যেহেতু সুরেশ পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো হয়ে উঠেছিলেন সেতু তার কাছে চাকরি পাওয়া অত্যন্ত সহজ হয়ে উঠেছিল।
তিনি প্রথম কার্নিভাল ক্রুজ লাইন জাহাজে রান্নার কাজ করেন। এরপর তিনি গ্র্যান্ড কেম্যান দ্বীপের হোটেল রিটজ কার্লটনে শেফের কাজে যুক্ত হন। এই সমস্ত কাজে তিনি মাসে 4 থেকে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে শুরু করেন। এই সময় ই সুরেশ একটি মেয়ের প্রেমে আবদ্ধ হন এবং তাকে তিনি বিয়ে করেন। 2013 সালে তিনি চেন্নাইতে ফিরে আসেন এবং একটি নতুন জীবন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। চেন্নাইয়ের একটি রেস্তোরাঁর চেইনে যোগ দিয়ে তিনি নিজের রেস্তোরাঁর চালু করার কথা ভাবেন। অবশেষে 2016 সালে তিনি তার স্ত্রীর সাথে তার রেস্তোরাঁ ‘সামি’স ডসকল’ শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের রেস্তোরাঁ অত্যন্ত জমজমাট হয়ে ওঠে।
এই চরম সাফল্য লাভ করার পর সুরেশ এই রেস্তোরাঁর আরো পাঁচটি শাখা খোলেন। সম্প্রতি তাদের রেস্তোরাঁ ব্যাংকুয়েট হল ও রুম পরিবেশন পরিষেবা প্রদান করছে। বর্তমানে সুরেশ 18 কোটি টাকার মালিক এবং তার কাছে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। সুরেশ এর জীবন কাহিনী থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে উচ্চতার চরম শিখরে পৌঁছানো সম্ভব।