১৯৮০ সালে প্রথমবার জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন করা শুরু করলে সেই দিন থেকে আজও প্রত্যেক বছর ২৭ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব পর্যটন দিবস হিসেবে পালিত হয়। আমাদের পৃথিবীতে এমন অনেক সুন্দর সুন্দর ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ পর্যটন কেন্দ্র বর্তমান যেখানে যাওয়া সত্যিই খুব গর্বের বিষয়। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য জিনিসও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত এবং এগুলো ভিন্ন ভিন্ন দেশে অবস্থিত। তবে আসুন এই প্রতিবেদনে আপনাদের ২০২২ এর সালের ২৭শে সেপ্টেম্বরের বিশ্ব পর্যটন দিবসের পূর্বে দেশের সপ্তম আশ্চর্যতম জিনিসগুলির ইতিহাস, বিশেষত্ব এবং কোন কোন দেশে অবস্থিত তা নিয়ে জেনে নিন।
১) ভারতে অবস্থিত তাজমহল (Taj Mahal is located in India)
ভারতের মধ্যে একমাত্র এই তাজমহলই সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উত্তরপ্রদেশে বাংলায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই ঐতিহ্যটি মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার শ্রী মমতাজের মৃত্যুর পর নির্মাণ করেছিলেন পুরো ঐতিহ্যটি সাদা মার্বেলের পাথর দিয়ে তৈরি। তাজমহল যেহেতু ধবধবে সাদা, তাই অনেক মানুষ এই ঐতিহ্যকে ভালোবাসার প্রতীকের সাথে সাথে শান্তির প্রতীক হিসেবেও মনে করেন। জানা যায় প্রায় ২০, ০০০ এরও বেশি কারিগর দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এই অপূর্ব সুন্দর তাজমহল।
২) চীনের মহাপ্রাচীর (The Great Wall of China)
পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যতম জিনিসের মধ্যে অন্যতম হলো চীনের মহাপ্রাচীর। ২১১৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সম্পন্ন এই বিশাল প্রাচীরটি নির্মাণ করতে প্রায় ২০ বছর সময় লেগেছিল। এই প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন শাসক কিন শি হুয়াং। এই প্রাচীন নির্মাণের মুখ্য কারণ ছিল নিজের সাম্রাজ্যকে রক্ষা করা। জানা গেছে এই প্রাচীনটি নির্মাণ কালে ১০ লক্ষেরও বেশি কারিগর নিহত হয়েছিল।
৩) ব্রাজিলের ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার (Brazil’s Christ the Redeemer)
বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে আরও একটি অন্যতম জিনিস হলো ১২৫ ফুট লম্বা ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার। তবে এটি ব্রাজিলের নির্মিত হয়নি হয়েছিল ফ্রান্সে হ্যাটার দা সিলভা কস্তার নকশায়। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই মূর্তিটির উপর বছর যে তিন থেকে চার বার বজ্রপাত হয়।
৪) মেক্সিকোতে অবস্থিত চিচেন ইতজা (Chichen Itza is located in Mexico)
মেক্সিকোতে অবস্থিত এই ঐতিহ্যটি সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এই মায়া সভ্যতার একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। এটি মেক্সিকোর সেরা সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক প্রাণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ১২০০ বছরেরও পুরোনো এই ঐতিহ্যের ইতিহাস। ইতিহাস অনুযায়ী জানা গেছে প্রাক-কলম্বিয়ান মায়া সভ্যতার লোকেরা এই সভ্যতা নিজের হাতে নির্মাণ করেছিল। এই স্থানের প্রধান বিশেষত্ব হলো এখানে অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যায়।
৫) ইতালির কলোসিয়াম (The Colosseum in Italy)
৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮২ খ্রিষ্টানদের মধ্যে প্রায় ৯ বছর ধরে ইতালির কলোসিয়ামটি নির্মিত করেছিলেন সম্রাট টাইটাস। রোমের এই কলোসিয়ামটি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং প্রাচীন অ্যাম্ফিথিয়েটার। জানা গেছে এর ভিতরে প্রায় চার লক্ষেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
৬) পেরুর মাচু পিচু (Peru’s Machu Picchu)
দক্ষিণ আমেরিকার পেরুতে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মন্দির মাচু পিচুকে ‘লস্ট সিটি অফ দ্য ইনকা’ বলা হয়। ১৯৮৩ সালে, ইউনেস্কো মাচু পিচুকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি।
৭) জর্ডানের পেট্রা (Petra in Jordan)
পেট্রা জর্ডানে অবস্থিত গোলাপি রঙের মেলে পাথর দিয়ে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক শহর, এই রঙের কারণে পেট্রা রোজ সিটি নামেও পরিচিত। পেট্রাতে অনেক সুন্দর সুন্দর মন্দির ও সমাধি রয়েছে। এটাও পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়।