Skip to content

বাঙালি সমাজের রীতি অনুসারে মেয়েদের বিয়ের পর পরতে হয় শাখা পলা! কিন্তু কেন? আসল কারণ শুনলে চমকে উঠবেন

প্রত্যেকটা সমাজে বিয়ের পর মেয়েদের জন্য কিছু রীতি নীতি থাকে যা একজন সধবা মেনে চলেন আজীবন। আমাদের হিন্দু দ্বিতীয় অনুযায়ী বিবাহের পর থেকেই সিঁথিতে সিঁদুর এবং হাতে শাঁখা পলা পড়ে থাকতে হয় সমস্ত সধবা মহিলাদের। হিন্দু মত অনুযায়ী মনে করা হয়, শাঁখা পলা এবং সিঁদুর স্বামীর জীবন আয়ু বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও বর্তমানে নানা ব্যস্ততার কারণে এবং আধুনিকতার জেরে অনেকেই শাঁখা পলা পড়েন না সবসময়। তবুও কোন বিবাহিত নারী যদি শাড়ির সঙ্গে সিঁদুর এবং শাঁখা পলা পরেন তাহলে ভীষণ ভালো লাগে তাকে।

Bridal look

তবে এখন প্রশ্ন হলো এই রীতি কোথা থেকে এলো? কেন হিন্দু সমাজে শাখা বলা পড়ার নিয়ম রয়েছে? এর কারণ খুঁজতে হলে আমাদের কিছুটা পুরনো দিনে চলে যেতে হবে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বলা হয়েছে, শঙ্খ অসুর নামে এক শক্তিশালী অসুর একসময় স্বর্গ এবং মর্ত জুড়ে তান্ডব শুরু করেছিল। প্রতিবারের মতোই স্বর্গের সমস্ত দেবতা বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন এই অসুরের সঙ্গে যুদ্ধে না পেরে উঠে। সকলের কথা মতো ওই দানবকে বধ করেন নারায়ন।

Ornaments

শঙ্খ নামক এই দানবের স্ত্রীর নাম ছিল তুলসী। স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা করে তিনি বিষ্ণুর জপ করতে শুরু করেন। অবশেষে তুলসীর ডাকে সাড়া দেন বিষ্ণু। কিন্তু কোন মৃত মানুষের প্রাণ পুনরায় সঞ্চার করা সম্ভব নয় তাই তুলসীর কথা রাখতে পারেন না বিষ্ণু। অবশেষে তিনি নিহত শঙ্খ অসুরের হাড় দিয়ে সাদা রঙের চুড়ি তৈরি করে তুলসিকে দেন। ওই চুড়ি নিজের হাতে পড়ে স্বামীকে কাছে পাওয়ার অনুভূতি পান তুলসী। সেই থেকে স্বামীর মঙ্গল কামনায় বাঙালি সমাজে শাঁখা পড়ার রীতি প্রচলিত হয়।

Sakha pola

অন্য এক কাহিনী অনুসারে একবার স্বর্গে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল যেখানে সমস্ত দেবদেবী নিমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু আমন্ত্রণ পেয়ে পার্বতী ভীষণ চিন্তিত হয়ে যান কারণ সেখানে উপস্থিত সকলের গায়ে থাকবে মনি মানিক্য, এমতাবস্থায় তিনি কিভাবে নিরাভরণ অবস্থায় সেখানে যান?

Sakha Pola

 

এই চিন্তা নিবারণ করার জন্য তিনি বিশ্বকর্মার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু বিশ্বকর্মা বলেন, সব দেব-দেবীর অলংকার তৈরি করতে পৃথিবীর সমস্ত রত্ন শেষ হয়ে গেছে। শুধু সমুদ্রের তলায় শঙ্খ অবশিষ্ট আছে তাই তিনি শঙ্খ দিয়ে দেবী পার্বতীর অলংকার প্রস্তুত করেন। সেই অলংকার পড়ে যখন অনুষ্ঠানে যান পার্বতী তখন শঙ্খের উজ্জ্বল আভায় অন্য সমস্ত দেবদেবীর রত্ন অলংকার ম্লান হয়ে যায়।

Bride

শঙ্খ পরিধানের পেছনে দুটি গল্প থাকলেও পলা পড়ার পেছনে কোন পৌরাণিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। তবে পড়ার পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে কারণ হাতে পলা পড়লে রক্তাল্পতার সমস্যা কমে যায় এবং রজস্রাব জনিত সমস্যাও দূর হয়ে যায় পলা পরিধান করলে।