আমাদের জীবনে রক্তের (Blood) দাম প্রচুর। এক ফোঁটা রক্তই (Blood) আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। রক্তের ভিত্তিতেই সমস্ত ডাক্তাররা শরীরে উপস্থিত কোনও রোগ কিংবা অন্যান্য খনিজ মৌলগুলির পরিমাণ খুঁজে পেতে সক্ষম হয়। যখন কোনও ব্যাক্তির শরীরে রক্তের ঘাটতি দেখা যায়, তখন তাকে সেই ব্যাক্তির গ্রুপের রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন ভুলবশত একজনের অন্য গ্রুপের রক্ত কোন ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করলে কী হতে পারে?
আমাদের রক্ত তৈরি হয় প্লাজমা নামক তরল লোহিত রক্তকণিকা থেকে। একজন ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ করা সম্ভব লোহিত কণিকায় অ্যান্টি জেনের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির মাধ্যমে। লোহিত কণিকায় দুই ধরনের অ্যান্টিজেন বর্তমান থাকে। তাই হল অ্যান্টিজেন এ (Antigen A) এবং এন্টিজেন বি (Antigen B)।
যে রক্তে ‘অ্যান্টিজেন এ’ (Antigen A) বর্তমান রক্তের গ্রুপ হল এ (Blood Group A) আর যে রক্তে ‘অ্যান্টিজেন বি’ (Antigen A) বর্তমান সেই রক্তের গ্রুপ হল বি (Blood Group B)। আবার যদি রক্তে উভয় অ্যান্টিজেন উপস্থিত না থাকে তবে রক্তের গ্রুপ হয় ‘O’, আর যদি উভয় অ্যান্টিজেন উপস্থিত থাকে তাহলে রক্তের গ্রুপ ‘AB’ হয়। তাই রক্ত সঞ্চালনের কাজটি খুব যত্ন সহকারে করা হয়। কারণ কোন ব্যক্তির শরীরে যদি অন্য ব্লাড গ্রুপের রক্ত প্রবেশ হয় তাহলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
এমনকি অন্য গ্রুপের রক্ত শরীরে প্রবেশ করলে মৃত্যু অবধি হতে পারে। কারণ রক্তে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিজেন প্রবেশ করলে বিক্রিয়া শুরু হয় এবং সবগুলো একত্রিত হয়ে যাওয়ার পর রক্তনালীতে ব্লক হয়ে যায়। তখন রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করলে রক্ত চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে।
এছাড়াও রক্ত রসে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। ফলে প্রস্তাবের মাধ্যমে গাঢ় বাদামী রঙের পদার্থ বের হতে শুরু করে যা পরে বিলিরুবিন নামক পদার্থের পরিণত হয়ে জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। অন্য গ্রুপের রক্তের পরিমাণ শরীরে বেশি প্রবেশ করলে তখন মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত হয় কারণ সেই সময় রক্তের অনেক ধরনের শৃঙ্খল প্রক্রিয়া ঘটতে শুরু করে।