চেষ্টাই সাফল্যের মূলমন্ত্র। এই উক্তিটি বাস্তবে নিজের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন বহুমানুষ। যার চেষ্টা থাকে সে কোনও দিন কোনও কাজে বিফল হয় না। তেমনই এই উক্তিটি আবারও গর্বিত হয়েছে একজন বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রীর জন্য। নদিয়া শান্তিপুরের এই ছাত্রীর নাম পিয়াসা মহলদার (Piasa Mahaldar)। সম্প্রতি তিনি NET -এ ৯৯.৩১ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। প্রতিবছরই NET -এ বহু ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো ফলাফল করে আসছে। তবে পিয়াসা মহলদার একজন ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জ (Physically challenged) মেয়ে, যার হাত ছোট, পা নেই বললেই চলে, শারীরিক বৃদ্ধি কোমর পর্যন্ত ও মোট উচ্চতা মাত্র তিন ফুট। তবে এমন অবস্থাতে তিনি কিন্তু পিছু পা হননি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করেও দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছেন। যা সকলের কাছে প্রসংশনীয়।
এমন দুর্দান্ত রেজাল্টের পর পিয়াসা যেকোনও ভালো কলেজের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হতে পারেন সাথে PHD করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন। বলা যায় দীর্ঘসময় ধরে কঠোর পরিশ্রমের পর তিনি এই পরীক্ষায় সফল হন। তার বর্তমান বয়স ২৫ বছর। নিজের দমে উঠে বসা তার পক্ষে খুবই কষ্টকর। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাসিন্দারা বর্তমানে তার সাথে দেখা করতে আসে।
প্রথমে তার পড়ালেখা করতে বেশ কষ্ট হত। তবে তিনি নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে তুচ্ছ মনে করে মায়ের কোলে করে স্কুল যেতেন এবং বেঞ্চের উপর শুয়ে শুয়ে লিখতেন। পরীক্ষার হলেও তার জন্য এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চলতি বছরেই ২০২২ সালে তিনি ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট দিয়েছিলেন পরীক্ষাকেন্দ্রের টেবিলের ওপর শুয়ে শুয়ে। গত শনিবার এই পরীক্ষার দুর্দান্ত রেজাল্ট বদলে দেয় তার জীবন। পরীক্ষায় পিয়াসা ৯৯.৩১ শতাংশ নম্বর পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে তিনি স্বপ্ন দেখছেন কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র সাহিত্যের বিশেষ কোনও বিষয় পিএইচডি করার। জানিয়ে রাখি, পিয়াসার এখনও কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে অধ্যাপিকার চাকরি পাওয়ার জন্য প্রায় ২ বছর সময় লেগে যেতে পারে। তবে তিনি সেই সময়টি নষ্ট না করে পিএইচডি করতে চান।