আজকাল কোন ব্যক্তি স্মার্টফোন ছাড়া কাজ করতে পারেন না। ব্যবসার কাছ থেকে শুরু করে পড়াশোনা সমস্ত বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রাখা এমনকি অনেকদূর পর্যন্ত কারোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য এই মোবাইল ফোনই অপরিহার্য। এই নতুন প্রজন্ম এই মোবাইলের মধ্যেই বিভিন্ন রকমের বিনোদন সামগ্রী নিজের পছন্দ অনুযায়ী খুঁজে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় অতিবাহিত করছে।
এটা একেবারেই অস্বীকার করা যায় না যে নতুন প্রজন্ম মোবাইল ফোনের প্রতি বেশী আসক্ত হয়ে পড়েছে এবং তাদের মূল্যবান সময়ও অতিবাহিত করে প্রয়োজনে তুলনায় বেশি মোবাইল ব্যবহার করছে। আর ঠিক এই কারণেই মোবাইল আবিষ্কারক মার্টিন কুপার (Martin Cooper) উপদেশ দিয়েছেন যে, যারা ডিভাইসে অতিরিক্ত পরিমাণে সময় অতিবাহিত করেন, তাদের অবিলম্বে এই ব্যবহার কমানো উচিত। আসুন জেনে নিই এই ব্যাপারে তার বক্তব্য কি……
আমেরিকান সাইন্টিস্ট তথা বিশ্বের সর্বপ্রথম ওয়ারলেস ডিভাইসের আবিষ্কারক হলেন মার্টিন কুপার (Martin Cooper)। সম্প্রতি একটি চ্যাট শোতে তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং সেখান থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘প্রত্যেক মানুষ দৈনিক পাঁচ ঘন্টার ঊর্ধ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন এ সম্পর্কে আপনার কি বক্তব্য ?’ প্রশ্ন শুনেই বিজ্ঞানী প্রথমে অবাক হয়ে যান এবং তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন “সত্যিই কি সবাই ৫ ঘন্টার ঊর্ধ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তবে আমি তাদের বলবো তারা যেন এই কাজটি ভুলেও না করেন।” এছাড়াও মিস্টার মার্টিন কুপার সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তিনি সম্ভবত তার ফোনে ৫ ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় করেন। কারণ তিনি এর চেয়ে বেশি জীবন উপভোগ করতে পছন্দ করেন এবং উপদেশ অনুসারে তিনি প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজেদের জীবন উপভোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
১৯৭০-এর দশকে মার্টিন কুপার প্রথম মোবাইল ফোনের বিকাশের জন্য মটোরোলা(Motorola) কোম্পানিতে উদ্ভাবনী দলের হয়ে নেতৃত্ব দেন। এরপর তিনি ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হন যিনি, ১৯৭৩ সালে তার যুক্ত টেলিফোনের বিকল্প হিসাবে একটি হ্যান্ডহেল্ড সেলুলার ফোন (handheld cellular mobile) আবিষ্কার করেছিলেন। যার কারণে সারা বিশ্বজুড়ে তিনি আজ পরিচিত।
তিনি ইলিনয়িস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (Illinois Institute of Technology) থেকে ১৯৫০ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। স্নাতক ডিগ্রী শেষ করার পর তিনি কোরিয়ার যুদ্ধের (Korean War) সময় মার্কিন নৌবাহিনীর সংরক্ষিত বাহিনীতে সাবমেরিন অফিসার হিসাবে যুক্ত হন। এরপরে আইআইটি থেকেই ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৫৭ সালে। এবং তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন ২০০৪ সালে।