Skip to content

দক্ষিণেশ্বরের নিকটেই স্থিত এই জাগ্রত আদ্যাপীঠ মন্দির, যেখানকার অলৌকিক কাহিনী শুনলে অবাক হবেন!

    img 20221120 083707

    বাঙালির কাছে তাদের জনপ্রিয় তীর্থস্থানগুলির মধ্যে দক্ষিণেশ্বর (Dakshineshwar) হলো অন্যতম আর এখানেই রয়েছে শ্রীকৃষ্ণের লীলা ক্ষেত্র  ভবতারিণী দেবীর মন্দির। তার ঠিক কিছু দূরেই অবস্থিত দেবী আদ্যার পীঠস্থান আদ্যাপীঠ। যা সকলের কাছে সবচেয়ে জাগ্রত প্রসিদ্ধ কালিমন্দির নামে পরিচিত। স্বয়ং দেবী কালী মা আদ্যা শক্তির এখানে বিরাজ করেন এবং তার সকল সন্তান তার আরাধনায় মত্ত হয়। নিচে রয়েছে দেবীর ধ্যানরত শিষ্য শ্রীরামকৃষ্ণের মূর্তি এবং দেবীর উপরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি।

    Hindu temple

    অন্নদাঠাকুর (পৈতৃক নাম অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য) মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তার পিতা ছিলেন অভয়চরণ ভট্টাচার্য এবং মাতা তিলোত্তমা দেবী। অন্নদাঠাকুর তাদের মেজো সন্তান ছিলেন। বাংলা সময়টা তখন ১৩২১, আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় কবিরাজি পড়তে এসেছিলেন তিনি। কলকাতার আর্মহাস্ট স্ট্রিটে এক বন্ধুর বাড়িতে থাকতেন এবং সেখানেই কবিরাজি পাশ করেছিলেন ভালো ফলাফল নিয়ে। ডিসপেনসারির জন্য দোকানও ভাড়া নিয়েছিলেন বন্ধুর বাবার থেকে সাহায্য নিয়ে।

    Ma kali

     

    এছাড়াও কথিত আছে, বাংলাদেশে মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় তিনি বারবার একটি সন্ন্যাসীর স্বপ্নাদেশ পেতেন। এমনকি বন্ধুর বাড়িতেও এই স্বপ্ন তাকে বারবার দেখতে হতো। এর পর মুহূর্তেই তিনি স্বপ্নাদেশ পান শ্রী রামকৃষ্ণের। স্বপ্নাদেশে রামকৃষ্ণ তাকে জানান, ইডেন গার্ডেনসে ঝিলের পাশে নারকেল এবং পাকুড় গাছের কাছ থেকে কালীমূর্তি নিয়ে আসতে। শ্রীরামকৃষ্ণের আদেশ অনুযায়ী, তিনি ঝিলের পাশ থেকে উদ্ধার করেন আদ্যামূর্তি। এবং ঠিক তার পরেই দেবীর স্বপ্নাদেশে মূর্তিটি বিজয় দশমীর তিন মাঝ গঙ্গায় বিসর্জন দেন। মূর্তিটির একটা ছবি তুলে রেখেছিলেন আর তা থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল বর্তমানের আদ্যামূর্তি।

    Sri Ramkrishna

    এই ঘটনার পর ১৯২৫ সালে তিনি সন্ন্যাস দীক্ষা নেন শ্রীরামকৃষ্ণদেবের আদেশে। দেবী আদ্দ্যার ভোগ তৈরি করার অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রাধাকৃষ্ণের জন্য সাড়ে ৩২ সের চালে রান্না হয়। দেবীর আদ্যার জন্য রান্না করা হয় সাড়ে ২২ সের চালে আর রামকৃষ্ণ পরহংসদেবের ভোগ রান্না হয় সাড়ে ১২ সের চালে। পঞ্চব্যঞ্জন হিসাবে এই ভোগ নিবেদন করা হয়। এর সাথে পরমান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। এই বিষয়ে অন্নদা ঠাকুরের একটি করা নির্দেশ ছিল। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন বৃহৎ কোন ভোগ মন্দিরে প্রবেশ করানো যাবে না।  শুধুমাত্র দেবীর কাছে পরমান্ন ভোগই নিবেদন করা হবে। আদ্যাপীঠে আজও সেই নিয়ম মানা হয় এবং রাতে তৈরি হয় অমৃতভোগ। যে তৈরি হয় উৎকৃষ্ট মানের চাল ও ঘি দিয়ে।

    Kali

    একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্নদা ঠাকুর নিজে ঠিক করে গিয়েছিলেন যা আজ পর্যন্ত হয়ে আসছে। তিনি বলেছিলেন বালকের জন্য মন্দিরের সমস্ত আয় থেকে ব্রহ্মচর্যাশ্রম তৈরি হবে এবং নারীদের জন্য তৈরি হবে আর্য নারীর আদর্শ শিক্ষাদান কেন্দ্র। আর যারা সংসারবিবাগী হবে তাদের জন্য তৈরি হবে বাণপ্রস্থাশ্রম। এছাড়াও সমস্ত রোগীদের জন্য তৈরি হবে হাসপাতাল। ১৩৩৫ সালে অন্নদা ঠাকুর পুরীতে শেষ দেহ ত্যাগ করেন।