বিশ্বের অন্যতম একটি সর্বোচ্চ হোটেল (Hotel)। ১০৫ টি কক্ষ বিশিষ্ট এই হোটেলটি ৫৫ বিলিয়ন টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে হোটেলটি ৩৬ বছর পুরনো হলেও আজও এখানে কেউ বসবাস করে না। অর্থাৎ এই হোটেলটিতে আজ পর্যন্ত কোন যাত্রী আসেনি, তবে কেন? সবার মতে এই হোটেলটি আজও নির্জন এবং ভুতুড়ে থেকে গেছে। চলুন আজ সেই রহস্য জেনে নেওয়া যাক।
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এই পিরামিড আকৃতির হোটেলটি অবস্থিত। বিভিন্ন প্রতিবেদনের সূত্রানুসারে, ১৯৮৭ সালে এই হোটেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন মাত্র ২ বছরের মধ্যেই এই হোটেল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পশ্চিমা দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার দরুণ এই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ায় এটি তহবিল সংগ্রহে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। তাই এই হোটেল নির্মাণের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি সঠিক সময় পাওয়া যেতনা।
অবশেষে একপ্রকার বিরক্তির শিকার হয়ে উত্তর কোরিয়া সরকার ১৯৯২ সালে এই হোটেলটির নির্মাণ কার্জ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর পর অর্থাৎ ২০০৮ সালে আবারও এই হোটেলের নির্মাণ কার্য শুরু হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০১২ সালের মধ্যে এই হোটেলটি প্রস্তুত করা হবে, কিন্তু পেরিয়ে যায় সেই সময়সীমা এবং আবার অসম্পূর্ণ থেকে যায় হোটেলটি নির্মাণকার্য। এখনও ৩৬ বছর পর ১০৫টি কক্ষ বিশিষ্ট এই হোটেলটি প্রায় অর্ধেক অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। অথচ এর নির্মাণের জন্য প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল।
জানিয়ে রাখি এই হোটেলটির অফিসিয়াল নাম Ryugyong, তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় তা ইউ-কিউং নামে পরিচিত। তবে বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ বর্তমানে এই দীর্ঘ হোটিলটিকে ভুতুড়ে হোটেল বা অভিশাপ স্থান বলেছেন। আবার অনেকে এই হোটেলকে ‘১০৫ বিল্ডিং’ বলে চেনেন। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু নির্জন এই ভবনটির নাম উল্লেখ আছে। তবে অসম্পূর্ণ থাকলেও বর্তমানে এই হোটেলটিকে একবার দর্শক করতে বহু পর্যটকের ভিড় হয়। তবে এই হোটেলটির কোনও আশ্চর্যতম রহস্য আজও সামনে আসেনি।