বিশ্বের বৃহত্তম রেল ব্যবস্থা হল ভারতীয় রেলওয়ে (Indian Railway)। প্রতিদিন ভারতের লক্ষাধিক মানুষ এই রেলওয়ের মাধ্যমে নিজেদের সঠিক গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছাতে পারেন। গন্তব্যের পূর্বে যাত্রীকে টিকিট কাটতে হয়। যদি কোনও ব্যক্তি টিকিট না কেটে ট্রেনে ভ্রমণ করেন, তবে ধরা পড়লে আপনার অনেক মূল্য জরিমানা দিতে হতে পারে। এমনই কড়া ব্যবস্থা রয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। তবে এই ঘটনাটি একটি বিপরীত ঘটনা। কর্মচারীর ভুলে এবার রেলকে দিতে হলো কয়েক হাজার টাকার জরিমানা। তবে কেন তাকে এত জরিমানা দিতে হল জানেন?
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯৯ সালে। তুঙ্গনাথ চতুর্বেদী নামে এক যাত্রী তাঁর বন্ধুকে নিয়ে মথুরা ক্যান্টনমেন্টে (Mathura Cantonment) হাজির হন। প্রকৃত ব্যাপারটি হল, মথুরা থেকে মুরাদাবাদ (Moradabad) যাওয়ার উদ্দেশে এই দুজন ব্যক্তি রওনা হয়েছিলেন। ট্রেনে ওঠার আগে নিয়ম মেনে টিকিট কাটা আবশ্যক। সেই সময় টিকিট মূল্য ছিল ৩৫ টাকা। অর্থ্যাৎ সেই দুজন ব্যক্তির ভাড়া হবে ৭০ টাকা। তবে ওই ব্যক্তির কাছে কোন খুচরো পয়সা না থাকায়, তিনি টিকিট কাউন্টারে ১০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন। তবে ভুল করে ওই টিকিট কাউন্টারের রেল কর্মচারী ৭০ এর জায়গায় ৯০ টাকা কেটে নেন এবং ১০ টাকা ফেরত দেন ওই ব্যক্তিকে।
তুঙ্গনাথ বাবু (Tunganath Babu) তার ভুল ধরিয়ে দিলেও রেল কর্মচারী তা স্বীকার করেননি। উপরন্তু তাকে ২০ টাকা ফেরতও দেননি। সেই দুই ব্যক্তি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়টি জানান। তবে তাদের প্রতি কোন সুরাহা করা হয়নি। এই ব্যাপারে তিনি আইনের সাহায্য নেন। প্রসঙ্গত, একজন তুঙ্গনাথ বাবু একজন আইনজীবি ছিলেন। তিনি এই অতিরিক্ত ২০ টাকার জন্য উত্তর-পূর্ব রেলের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে (Court of Consumer Protection) মামলা করেন।
২২ বছর ধরে চলতে থাকে এই মামলা এবং শুনানি হয় ১২০ টি। এত বছরের মামলার পর অবশেষে তুঙ্গনাথ বাবু জয়ী হিসাবে ঘোষিত হন। এখন তিনি ৬৬ বছর। ভারতীয় রেলের বিরুদ্ধে গিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মধ্যে তিনি জয়ী হন। আদালত থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকার সঙ্গে ১২% হারে সুদ সহ অতিরিক্ত টাকা ফিরত দিতে হবে ওই ব্যক্তিকে। দীর্ঘদিনের এই লড়াইয়ে বিজয়ী হয়ে তিনি অত্যন্ত খুশী। তবে অনেকেরই প্রশ্ন কেন তিনি মাত্র কয়েকটা টাকার জন্য এত বছর লড়াই করলেন? তিনি মিডিয়াকে জানিয়েছেন, এটা শুধুমাত্র টাকার লড়াই নয় বরং এটা সত্যের লড়াই।