ইসলাম ধর্মের প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবের (Saudi Arab) রাজধানী রিয়াদে করা খননে অনেক চমকপ্রদ বিষয় সামনে এসেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের আল-ফা স্থানে খনন করা একটি ৮০০০ বছরের পুরানো মন্দিরের সন্ধান পেয়েছে। এখানে একই পুরাতন যজ্ঞবেদি পাওয়া গেছে। খননের ফলাফলে দেখা যায়, সৌদি আরবে এখানে এক সময় হিন্দু সভ্যতা ছিল। আশ্চর্যের বিষয় হল যে যজ্ঞবেদীটি সাধারণত ভারতীয় মন্দিরগুলিতে একই দিকে থাকে। এরকম অনেক ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে যার উপর দেব-দেবীর ছবি খোদাই করা হয়েছে।
সৌদি আরব ও ফ্রান্সের প্রত্নতাত্ত্বিকদের সংগঠন সৌদি আরবীয় হেরিটেজ কমিশন এই খনন কাজ করেছে। কমিশনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এখানে মানববসতির ধ্বংসাবশেষ ও ১ হাজার ৮০৭টি কবর পাওয়া গেছে। এই ধ্বংসাবশেষগুলি দেখায় যে এখানে মানুষ একসময় বাস করত। মন্দির এবং যজ্ঞবেদি হিন্দু সভ্যতার প্রমাণ দেয়।
এভাবেই হিন্দু সভ্যতা নিশ্চিত হয়েছিল……
সৌদি আরবের হেরিটেজ কমিশন একটি বহুজাতিক দল নিয়ে জরিপটি পরিচালনা করে। জরিপের জন্য বায়বীয় তদন্ত থেকে শুরু করে মাটির গভীরে খনন করা। কথিত আছে যে আল-ফাউতে বসবাসকারী লোকেরা এখানে উপাসনা করে এবং বলিদানের আচার তাদের জীবনের একটি অংশ ছিল।
শুধু আল-ফাও-তে পাওয়া ধ্বংসাবশেষই নয়, এখানে প্রকাশিত ধর্মীয় শিলালিপি থেকে বোঝা যায় যে সেই সময়ের মানুষদের ধর্ম সম্পর্কে কতটা ধারণা ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে যুগের সভ্যতায় জটিল সেচ ব্যবস্থা ছিল। খাল, জলাশয় ছাড়াও শতাধিক গর্ত খনন করা হয়েছে। এখান থেকে বৃষ্টির পানি নিয়ে যাওয়া হতো মাঠে।
শুধু জীবিত নয়, যুদ্ধও হয়েছিল…..
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে যুগের মানুষ মরুভূমিতেও পানি সংরক্ষণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করত। অনেক সংগ্রামের পর এই পানি মাঠে আনা হয়। পাথরের শিলালিপিতে মাধেকার বিন মুনাইম নামে এক ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে। সে যুগের মানুষ শুধু কৃষিকাজই করত না, তাদের নিজস্ব দ্বন্দ্বও ছিল। মারামারি ও যুদ্ধও হয়েছিল, ধ্বংসাবশেষে সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধের চিহ্নও রয়েছে। দেশের মানুষ যাতে তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে তথ্য পেতে পারে সেজন্য হেরিটেজ কমিশন জরিপ ও খনন কাজ শুরু করেছে। এই সময়ের মধ্যে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ এখন সারা বিশ্বে শিরোনাম হচ্ছে।
কমিশন বলছে, এখানে খনন ও গবেষণার কাজ চলবে যাতে ইতিহাস-সংক্রান্ত নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। এখানকার মানুষ এভাবে ঐতিহ্য সম্পর্কে তথ্য পেতে পারবে। সৌদি আরবকে ইসলামের সবচেয়ে বড় দুর্গ বলা হয় কারণ এখানে মুসলমানদের পবিত্রতম মক্কা মদিনা। এই ধর্মের সঙ্গে যুক্ত সারা বিশ্বের মানুষ এখানে হজ করতে আসেন। ধর্মের পাশাপাশি সৌদি আরব সরকার এখন বিজ্ঞান ও গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে।