Skip to content

ক্লাস 10 এ ফেল করার পর পেটের দায়ে গিয়েছিলেন দুবাই, আজ দুবাইয়ে 4 হাজার কোটি টাকার মালিক

মানুষের মধ্যে কোন কিছু করার জেদ যদি থাকে তাহলে তার কাছে অনেক সুযোগ আসে। এমনকি সেই সুযোগ যদি নাও আসে, সেক্ষেত্রেও সেই ব্যক্তি নিজের কিছু করার জেদ এর দরুন সেই সুযোগ ছিনিয়ে নিয়ে আসে। এমন অনেক উদাহরণ আজ আমাদের সামনে রয়েছে যাদের কর্ম আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। আজ আমরা এমন একজন মারাঠি লোকের সাথে পরিচয় করতে যাচ্ছি যিনি শৈশবে চপ্পল ছাড়াই স্কুলে যেতেন।

যিনি দশম শ্রেণীতে ফেল করেছেন, এবং একটা সাধারণ মুদির দোকান চালাত। সেই ব্যক্তিই আজ দুবাইতে 4000 কোটি টাকার একটি কোম্পানির মালিক। আপনি এটি শুনে হতবাক হতে পারেন। কিন্তু ধনঞ্জয় দাতার এটাকে বাস্তব করে দেখিয়েছেন। একটি বিনয়ী পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ধনঞ্জয়ের বাবা মহাদেব দাতার ভারতীয় বিমান বাহিনীর একজন কনস্টেবল ছিলেন। এই চাকরির সুবাদে তাকে যে কোনো ক্ষেত্রে বদলি করা হতো।

Dhananjay

বদলির কারণে, মহাদেব ধনঞ্জয়কে অমরাবতীতে তার ঠাকুরমার বাড়িতে বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য পাঠান। তখন ধনঞ্জয়ের বয়স মাত্র 8 বছর। দাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে ধনঞ্জয়ের শৈশবও খারাপ অবস্থায় পড়ে যায়। ধনঞ্জয়ের বাবা দাদিকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু দাদি নিতে চাননি। এর প্রভাব পড়ে ধনঞ্জয়ের স্কুলেও। তাকে একটি ছোট স্কুলে যেতে হয়েছিল, এবং তার স্কুলে যাওয়ার জন্য পায়ে চপ্পল ও ছিল না, সে প্রতিদিন কেবল ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যেত।

বর্ষায় মাথায় ছাতা আর ব্যাগ ছাড়াই স্কুলে যেতেন ধনঞ্জয়। পোশাকের পাশাপাশি ছিল তার খাবারেরও অবস্থাও ছিল করুন। ধনঞ্জয়ের শৈশবে সকালের নাস্তা ছিল 2 টা রুটি আর যা কিছু সবজি পেত তাই নিয়ে স্কুলে যেতেন। এবং রাতে সেই রুটি খেয়ে ঘুমাতেন। ডাল ছিল মশলা ছাড়া। তিনি তার দাদীর সাথে 4 বছর কাটিয়েছেন। পরে তার বাবা কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করলে তিনি মুম্বাই ফিরে আসেন।

অবসরের পর বাবা দুবাইয়ের একটি দোকানে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি পান। সংসারের সব খরচ মেটাতেন তিনি। সাত বছর কাজ করার পর, তিনি ধনঞ্জয়কে দুবাইতে ডেকে একটি ছোট মুদি দোকান শুরু করেন। 1984 সালে ধনঞ্জয় দুবাইতে চলে যান। তখন তার বয়স ছিল মাত্র 20 বছর। বাবা মহাদেবের শুরু করা মুদির দোকানে সাহায্য করতে শুরু করেন ধনঞ্জয়। দোকানে সে খুশি ছিল.. দোকান থেকে ভালো আয় আসতে লাগল। 10 বছরে, তিনি আবু-ধাবিতে একটি এবং শারজাহতে আরেকটি দোকান খোলেন।

Dhananjay

এই দোকান থেকে তার সাফল্যের যাত্রা শুরু হয় এবং তখন থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি মন দিয়ে সেখানে ব্যবসা গড়ে তোলেন। দুবাইতে অনেক ভারতীয় ছিল। তাই ভারতীয়দের চাহিদা বুঝে তিনি মশলা ব্যবসাতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভারতীয়দের জন্য প্রয়োজনীয় মশলা সেই সময়ে দুবাইতে পাওয়া যেত না। বাবা আইডিয়া দেখালেন এবং প্রথম আল আদিল মশলার দোকান শুরু করলেন। আজ বাজারে তাদের এই ব্র্যান্ডের 9000 টিরও বেশি পণ্য রয়েছে।

তাদের কাছে 700 টিরও বেশি আচার রয়েছে। সেখানে সবই মারাঠি স্বাদের। লাতুর থেকে বিশেষ তুর ডাল, উরদ ডাল, জলগাঁও থেকে ছোলার ডাল এবং ইন্দোর থেকে মসুর ডাল আমদানি করা হয়।দিনে 15,16 ঘণ্টা কাজ করে কোটি টাকার ব্যবসা গড়েছেন এই মুদি দোকানদার। প্রথম দিকে দোকান করার জন্য তিনি তার মায়ের মঙ্গলসূত্রও বিক্রি করেছিলেন। সেই ধনঞ্জয় দাতারই আজ দুবাইয়ের মশলা রাজা হিসেবে পরিচিত। আজ তার কাছে 2 মিলিয়ন মূল্যের একটি রোলস রয়েস গাড়ি রয়েছে। এই গাড়িটি বিশ্বের মাত্র 17 জনের কাছেই রয়েছে।

Share